গাউছিয়া জুট বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার ধ্বংস, নারায়ণগঞ্জ
মুক্তিযোদ্ধারা পাকআর্মিদের ঘাঁটি নারায়ণগঞ্জের গাউছিয়া জুট মিলের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মার বিকল করার উদ্যোগ নেন। এই ট্রান্সফর্মারটি গাউছিয়া জুট মিলের মালিক ওঁ শান্তিবাহিনীর সদস্য খোদা বখস ভুইয়ার বাড়ির পাশের কোণায় অর্থাৎ মুড়াপাড়া গাউছিয়া কটন মিলের কোণায়। সেপ্টেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রুপগঞ্জের গ্রুপ কমান্ডার সামাদের নেতৃত্বে ৬ জন মুক্তিযোদ্ধা মহিকুর, আনোয়ার, মামুন, মো. আল আমিন দুলাল ওঁ সোনামিয়া নৌকাযোগে রূপসী খাল দিয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন থেকে বৈদ্যুতিক লাইন মুড়াপাড়া ওঁ গাউছিয়া জুট মিলে যেখানে সংযোগ করা হয় সেখানে যান। গন্ধপুর মাঠের আশেপাশে জনবসতি না থাকায় মুক্তিযোদ্ধারা বৈদ্যুতিক তারের থামে এক্সপ্লোসিভ লাগিয়ে ১ পাউন্ড ২ ফুট ফায়ারিং কড দিয়ে চার্জ করেন। সাথে সাথে তিনটি থাম পড়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা রূপসী দিয়ে না গিয়ে মুড়াপাড়া খালের ভেতর দিয়ে বের হয়ে ক্যাম্পে ফিরে আসেন। এরপর পাক আর্মিরা বিকল্পভাবে গাউছিয়া জুট মিলে বৈদ্যুতিক লাইন নেয়। ফলে মুক্তিযোদ্ধারা গাউছিয়া জুট মিলের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মারটি পুনরায় বিকল করার উদ্যোগ নেয়। মুক্তিযোদ্ধারা খোদা বখস ভুইয়ার ভাতিজা মতিনের সাথে যোগাযোগ করে পাক আর্মিদের অবস্থান সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ নাগাদ সামাদের নেতৃত্বে সোনা মিয়া, আবুল, মোঃ আল আমিন দুলাল, আনোয়ারসহ মুড়াপাড়া আসেন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জামালউদ্দীনএর বাড়ি থেকে শন পাটের রশি নিয়ে (৫০০ মিটারের মতো) একজনে কোমরের সাথে আরেকজনের কমর বেঁধে সামাদ, আবুল, মোঃ আল আমিন দুলাল সেখানে থেকে সাতঁরিয়ে পার হয়ে বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মারের পাশে যান। সাথে এক্সপ্লোসিভ ও দিয়াশলাই পলিথিনের ব্যাগে মুড়িয়ে নেন। ট্রান্সফর্মারের দুটি খুটিতে এক্সপ্লোসিভ ফিট করে ৫ ফুট পরিমাণ ফায়ারিং কড দেন। দু-তৃতীয়াংশ জায়গা মুক্তিযোদ্ধারা সাতরয়ে পার হয়ে আসার পর ট্রান্সফর্মারটি বিস্ফোরিত হয়। সাথে সাথে পাক আর্মিরা মুষলধারে ফায়ারিং শুরু করে।
[১১০] রীতা ভৌমিক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত