You dont have javascript enabled! Please enable it!

গঙ্গাপসাগরের যুদ্ধ, ব্রাক্ষণবাড়িয়া

যুদ্ধক্ষেত্রের অবস্থান এবং মুক্তিযোদ্ধা প্রেক্ষাপটে গঙ্গা সাগরের গুরুত্বঃ গঙ্গাসাগর ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত আখাউড়া থানার মোঘড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। গঙ্গাসাগর এলাকাটি সাধারণত খোলা এবং সমতল যার উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে গেছে তিতাস নদী। গঙ্গাসাগর এলাকার আশেপাশে অসংখ্য জলাভূমি রয়েছে। ফলে মেঠো পথে চলাচল কষ্টসাধ্য। গঙ্গাসাগর হতে আখাউড়া যেতে নোয়াপাড়ার নিকটে রাস্তাটি সুংকীর্ণ হয়ে আসার প্রতিরক্ষা অবস্থান গ্রহণের জন্য এলাকাটি অত্যন্ত উপযোগী। গঙ্গাসাগর আগরতলা হতে মাত্র ৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এবং আগরতোলা এয়ার ফিল্ডের অবস্থান ছিল আন্তর্জাতিক সীমারেখা হতে মাত্র কয়েকশত মিটার দূরে। আখাউড়ায় রেলওয়ে জংশন থাকায় এবং রেলপথে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম এর সংযোগ পথ গঙ্গাসাগরের অবস্থান হওয়া অবস্থান বিবেচনায় গঙ্গাসাগরের গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। ১৬ এপ্রিল পাকিস্তানি ১টি ব্যাটালিয়ন কুমিল্লা হতে আখাউড়ার উদ্দেশ্য অগ্রাভিযান করে। শত্রু যাতে আখাউড়া যেতে না পারে সে লক্ষ্যে মুক্তিবাহিনী বাধা দেওয়ার পরিকল্পনা করে। ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যার সময় গঙ্গাসাগরে মুক্তিবাহিনী কর্তৃক শত্রু বাধাপ্রাপ্ত হয়। ১৮ এপ্রিল ভোর চারটায় গোলান্দাজের সহায়তায় গঙ্গাসাগর দখলের লক্ষ্যে শত্রু ত্রিমুখী আক্রমণ রচনা করে। ১৮ এপ্রিল চারটা হতে বারটা পর্যন্ত তুমুল যুদ্ধ চলে এবং মুক্তিবাহিনীর গোলাবারুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ক্যাপ্টেন সালেক চৌধুরীর নির্দেশে পশ্চাৎপসরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। শত্রু থেকে নিজেদের বিচ্ছন্ন করার সময় সিপাহী মোশ্তফা কামাল তাঁর এলএমজি থেকে অনবরত কভারিং ফায়ার দিয়ে শত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করছিল। ১৮ এপ্রিল আনুমানিক একটায় পাকিস্তানীরা সিপাহী মোস্তফা কামালের অবস্থান চিহ্নিত করে তার ওপর সমন্বিত আক্রমণ করে তার অবস্থান দখল করে। স্বাধীনতা যুদ্ধে গঙ্গাসাগর যুদ্ধে শত্রুর ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। মুক্তিযোদ্ধা সিপাহী মোস্তফা কামাল শহীদ হন। গঙ্গাসাগর যুদ্ধে শত্রু জয়লাভ করে এবং গঙ্গাসাগর দখল করে।

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!