খুলনা রেডিও স্টেশনে অভিযান
খুলনা রেডিও স্টেশন-এর অবস্থান খুলনা সার্কিট হাউস থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার পশ্চিমে গল্লামারী ব্রিজ পার হয়ে। অর্থাৎ আজকের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় রেডিও স্তেশনেই শুরু হয়েছে। আর রেডিও স্টেশন চলে গেছে বয়রা। তখন এই এলাকায় আজকের মতো লোকবসতি ছিল না এবং গাড়ি ঘোড়া ও এতো যানবাহন চলাচল করত না। কারণ তখন খুলান-সাতক্ষীরা রোডও ছিল না আর খুলনা বাটিয়াঘাটা রাস্তা ছিল না। সুতরাং এলাকাটা ছিল ফাঁকা। শহরের লোকজন এই দিকে আসত না বললেই চলে। চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দখল ও স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পরা, সরকার গঠন ইত্যাদি আহ্বান চট্টগ্রাম রেডিও স্টেশন হেকে হওয়ায় সরকারের টনক নরে এবং এখানে মিলিটারী মোতায়েন করা হয়। তাই কীভাবে মিলিটারিদের খতম করা যায় এবং এই রেডিও স্টেশন সাময়িকভাবে ব্যবহার করা যায় চট্টগ্রামের মতো স্বাধীনতা যুদ্ধের কাজে খুলনা রেডিও স্টেশন ব্যবহার করা যায় আর সম্ভম হলো সমস্ত জন ত্রপাতি নিয়ে মুক্তিবাহিনীর জন্য পৃথক বেতার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা এই সব নানবিধ লক্ষ্য সামনে রেখে খুলনা রেডিও স্টেশন দখল করার পরিকল্পনা করা হয়। এই পরিকল্পনা তৈরি হয় রুপসা উপজেলার নৈহাটি স্কুলে বসে। মূল পরিকল্পনা তৈরি করেন মেজর এম এ জলিল, খুলনা বিপ্লবী পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ কামরুজ্জামান টুকু, সুবেদার মেজর জয়নুল আবেদনী প্রমুখ। এই সময় খুলনায় বিপ্লবী পরিষদ ও মুক্তিবাহিনী ক্যাম্প খুলনা শহরে টিকে থাকার অবস্থা না থআকায় ইতিমধ্যে রূপসা নদীর ওপর পারে এই স্কুলে স্থানন্তর করে কাজ শুরু করা হয়। প্রশিক্ষণ এগিয়ে চলেছে সুবেদার মেজর জয়নুল আবেদীনের নেতৃত্বে, বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ২০০/২৫০ থ্রি নট থ্রি রাইফেলও জোগাড় হয়ে গেছে। সুতরাং সবারই ধারণা অতি শীঘ্রই খান্সেনারা মুক্তিবাহিনীর কাছে শোচনীয় পরাজয় বরণ করে আত্নসমর্পণ করবে। শেখ কামরুজ্জামান টূকুর সিদ্ধান্ত মোতাবেক ৩রা এপ্রিল রাত ১২টা ১ মিনিটে খুলনা রেডিও স্টেশন আক্রমণ ও ন্দখল করে নেয়ার চূড়ান্ত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। নৈহাটি হাই স্কুল ক্যাম্প থেকে রাত সাড়ে ৯টায় ২৫০ জন মুক্তিবাহিনী সদস্য শেখ কামরুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে রওনা হয়। রূপসা নদী তরতর করে বয়ে চলছে, শহর বৈদ্যুতিক আলোয় উদ্ভাসিত, চারদিকে পাকসেনাবাহিনীর কনভয় টহল দিয়ে ফিরছে, আর কতিপয় বাঙালি দালাল তাদের পক্ষ অবলম্বন করে ওদের সাহায্য করছে, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ব্যাপার হলও শহরের বিহারীরা ব্যাপক লুটতরাজ করত। পরিচালক শেখ কামরুজ্জামান টুকু অতি সাবধানে অগ্রসর হয়ে রাত ১০টায় নৌকাযোগে নদী পারের সময় ঘটল এক দুর্ঘটনা- এক আনসারের রাইফেল থেকে হঠাৎ করে গুলি বের হয়ে নৌকার মাঝির গায়ে লাগে। সাথে সাথে সে মারা যায়। কোন অবস্থায় এটা সামাল দিয়ে সকলে নদী পার হয়ে যায়। কিন্ত ঘটনাটা সবার মনে দাগ কাটে। এই যুদ্ধের ফিল্ড কমান্ডার থাকবেন মেজর জয়নুল আবেদীন এবং রেডিও স্টেশনের দক্ষিণ, পূর্ব ও পশ্চিমে এই তিন দিক থেকে আক্রমণ করা হবে আর উত্তর দিকে থাকবে ফাঁকা। সুবেদার মেজর জয়নুল আবেদীন হাজী ও আজকের জাহিদ সড়কের নিকট থেকে কাট অফ গ্রুপের নেতৃত্ব দেবেন যেন খুলনা শহর বা যশোর থেকে খানসেনারা রেডিও স্টেশনের দিকে যেতে না পারে। নায়েক সিদ্দিককে নিয়ে শেখ কামরুজ্জামান টুকু রেডিও স্টেশনের দক্ষিণ দিকে চলে যান এবং অন্য একজন সেনাবাহিনীর নায়েকের নেতৃত্বে ৪০/৫০ জনের একটি দল পশ্চিম দিক থেকে আক্রমণ করবে এবং শেখ কামরুজ্জামান টুকু তাঁর দল দিয়ে দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ করবে। সবার হাতেই থি নট থ্রি রাইফেল। ছাত্র নেতা জাহিদুর রহমান জাহিদ, মোশাওরফ হোসেন, হাবিব থি নট থ্রি রাইফেল। ছাত্র নেতা জাহিদুর রহমান জাহিদ, মোশারফ হোসেন, হাবিব, মোসলেমসহ অন্যান্য নির্ভীক লোকজন দিয়ে রাত ১২ টা ৩০ মিনিটে খুলনা রেডিও স্টেশন আক্রমণ করা হয়। গুলি শুরু হওয়ার সাথে সাথেই খানসেনারা ব্যাপক গোলাগুলি শুরু করে। রাতের নিস্তব্ধতা খান খান হয়ে যায়। বীরদর্পে মুক্তিযোদ্ধারা মাত্র ৩০/৪০ মিনিটের মধ্যে রেডিও সেন্টারের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু সম্মুখে বাঁধা হল রেডিও সেণ্টারের পাক প্রাচীর ও উপরের কাঁটা তাঁর। মূল পরিকল্পনা প্রাচীর ভেঙে বা তাঁর অপসারণ করার ব্যবস্থা না থাকায় মুক্তিবাহিনী মারাত্মক সমস্যায় পড়ে। এক সময় প্রাচীর ভাঙ্গা বা তারের বেড়া অতিরক্রম করার চেষ্টা চলতে থাকে এবং উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে গতি লাভ করে। খানসেনারা মৃত্যুবপণ বৃষ্টির মতো গুলি বর্ষণ করতে থাকে। এদিকে সুবেদার মেজর জয়নুল আবেদীন ও তার দল শহর থেকে আসা কয়েকটি ট্রাক আক্রমণ করে পর্যুদস্ত করে দেন এবং তারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়। যেহেতু শহর থেকে খুলনার রেডিও সেন্টারে যাওয়ার এটাই একমাত্র রাস্তা। সুতরাং, এই রাস্তায় পাকবাহিনীকে রুখে দেয়া বেশ সহজ। ইতিমধ্যে কয়েকটি রাইফেল আর ফায়ার দিচ্ছে না, খাবার পানি না থাকায় তারা বেশ শ্রান্ত-ক্লান্ত হয়ে পড়ে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এখানে তেমন কোন বাঙ্কার বা আড়াল না থাকায় দিনের বেলা যুদ্ধ পরিচালনা অসুবিধা হবে। এদিকে স্বঘোষিত ক্যাপ্টেন আসিফুর রহমানের নেতৃত্বে একটা দল বানিয়াখামার হয়ে রেডিও স্টেশনের দিকে অগ্রসর হচ্ছিল কিন্তু রাতের বেলায় টার্গেট ঠিক করা যেমন কঠিন ছিল তেমনি সবার উপযুক্ত প্রশিক্ষণ না থাকায় পথ চলতেও তাদের সমস্যা হচ্ছিল। আবার রেডিও স্টেশনে যুদ্ধ হচ্ছে। কিন্তু শিপইয়ার্ড, সার্কিট হাউস, রূপসা নদীতে অবস্থানরত গান বোট থেকেও ব্যাপক উড়ো ফায়ার আসছে। মেশিন গানের অজস্র গুলি, কখনও বা পাকসেনাদের ট্রেসার বল ফায়ার, মুক্তিযোদ্ধাদের গুলিবর্ষণ সব মিলিয়ে এক এলাহি কান্ড। এই দলের কয়েকজন অসীম সাহসে ভর করে রাত ২টার দিকে রেডিও স্টেশনের উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে কলাবাগানের ভেতর দিয়ে রেডিও সেন্টারের প্রাচীরের নিকট পৌঁছে যায়। তারা খানসেনাদের কথাবার্তা শুনতে পায়। তারা উর্দূতে জীবন রক্ষার জন্য প্রাণপণ যুদ্ধ করার কথা বলছিল, ওয়ারলেসে তারা বার বার সাহায্যের আবেদন করছিল। কিন্তু পাকা প্রাচীর অতিক্রম করে তারাও কোন অবস্থায় রেডিও স্টেশনের ভেরত ঢুকতে পারল না। শেখ কামরুজ্জামান টুকুর নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী দলটি রেডিও স্টেশন গেটে উপনীত। কিন্তু প্রবেশ পথ লক্ষ্য করে পাকসেনাদের গুলিবর্ষণের কোন শেষ নেই। তারাও বুঝে গেছে প্রাণপণে মেইন গেট রক্ষা করতে না পারলে খানসেনাদের রক্ষা নেই। কুড়াল, দা, শাবল ইত্যাদি যোগাড় করে প্রাচীর ভাঙ্গাও এ মুহূর্তে অসম্ভব অথচ যুদ্ধের পরিকল্পনা করার সময় এই সমস্যাগুলি আদৌ তাদের মাথায় আসেনি। অতঃপর অসীম সাহসী হাবিব যে ছিল দাদা মাচ ফ্যাক্টরীর একজন কর্মচারী সে বোমা হাতে নিয়ে এক লাফে মেইন গেট টপকে ভিতরে প্রবেশ করে। মেইন গেট খুলে দেবে তখন অন্যান্য সবাই রেডিও স্টেশনের ভূল ভবনে ঢুকে যাবে। হাবিব জোরে নিঃশ্বাস নিয়ে দিলে এক লাফ। কিন্তু খানসেনারাও ট্রেসারবল ফায়ার করে তার আলোয় স্পষ্ট দেখতে পায় যে মুক্তিবাহিনী মেইন গেটে। তাই হাবিব যে মুহূর্তে লাফ দিল ওমনি একটি গুলি তার জীবনটা কেড়ে নেয়। তবে কি রেডিও স্টেশন দখলের সব প্রচেষ্টা বিফল হবে? আর এক প্রচেষ্টা নিল মোসলেম, দেশমাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করার লড়াইয়ে জীবন দেয়ার সে কি প্রতিযোগিতা! মোসলেম একটু সরে হাবিবের মতো মেইন গেট টপকে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করল। কিন্তু খানসেনাদের চাইনীজ রাইফেলের এক ব্রাশে তারও প্রাণবায়ু উড়ে গেল। এদিকে ভোর হয়ে আসছে। সুবেদার জ্যনুল আবেদীন খানসেনাদের আটকিয়ে রাখার চেষ্টায় রত। কিন্তু যত সময় যাচ্ছে শহর আক্রমণের তীব্রতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে সুবেদার মেজর জয়নুল আবেদীন সিটি কলেজের পূর্ব্দিকে একটা একতলা কোয়ার্টারের পাশে ক্যামোফ্লেজ করে পজিশন নিয়ে আছেন। ইতিমধ্যে খুব পিপাসায় শ্রান্ত ক্লান্ত হয়ে অনেকেই চলে গেছে। কিন্তু তিনি অতি বিশ্বস্ততার সাথে ফিল্ড কমান্ডের গুরুদায়িত্ব পালন করে চলেছেন। পাকসেনারা খুলনা রেডিও স্টেশনের দিকে যাওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় কয়েকটী ৩ টনের ট্রাক, জীপ ও কনভয় নিয়ে একযোগে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নেয়। বঙ্গশার্দুল জয়নুল আবেদীন বীর বিক্রমে লড়ে যান। প্রথমে একটা ট্রাকের টায়ারে গুলি করে সেটাকে অচল করে দেন। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িটা থেমে যায়। খানসেনারা গাড়ি থেকে নেমে সেটাকে ঠেলে নেয়ার চেষ্টা করলে জয়নুলের রাইফেল গর্জন করে ওঠে। এখানে তাদের ১০/১২ জন নিহত হয়। আহত হয় অনেকে। যদি তার হাতে কোন অটমেটিক হাতিয়ার থাকত তবে সেদিনের যুদ্ধের ফলাফল হত অন্যরকম। তিনি গড়িয়ে আঁকা বাঁকা কায়াদায় বিভিন্ন স্থানে থেকে গুলি করে ওদের ব্যস্ত রাখেন। আর শত্রুপক্ষ বেপরোয়াভাবে এলোপাথাড়ী চতুর্দিকে গোলাগুলি করতে থাকে তিনি যেখানে ছিলেন গুলিতে সেসব স্থান ঝাঁঝরা হয়ে গেল। অতঃপর তিনি স্থান পরিবর্তন করে সুবিধাজনক একটি আশ্রয়ের সন্ধান বুকে হেঁটে ক্রলিং করে চলছিলেন কাছের একটা পাকা ভবনে ঢোকার বাসনায়। তিনি বেশ দ্রুতেই চলছিলেন কিন্তু বারান্দায় আসার সাথে সাথে একটা গুলি তাকে ভেদ করা যায়।
এই মহান সৈনিকের জীবন প্রদীপ এখানেই নিভে যায়। পেলাম শেখ রফিউদ্দিনকে, বজ্রকন্ঠে জলদি তাঁকে কয়েকটা কুড়াল আনার নির্দেশ দিলাম। কুড়াল তাড়াতাড়ি এল, স্ট্রং রুম ভেঙে বন্দুক বের করে নিলাম। অপারেশন যখন শেষ করলাম তখন মাগরিবের আযান হয়। দুঃসাহসিক এ অভিযান পুরোপুরি সফল হওয়ায় সকলকে বাঁশী বাজিয়ে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিলাম। ইতিমধ্যে লঞ্চ ঘাটে কপিলমুনির দিক থেকে এল “বনকন্যা’ লঞ্চ। ভাবলাম, হয়ত মিলিটারী বা রাজাকার এসেছে-‘চালাও ২০ রাউন্ড গুলি’ নির্দেশ দিলাম। গুলি চলল সাথে সাথে। কোন জবাব তো এলই না বরং লঞ্চখানার সারেং ভয় পেয়ে হয়ত হাল ছেড়ে গেছে। তাই লঞ্চখানা স্রোতে ভাসতে ভাসতে চলে গেল। আমরা সবাই বজ্র কণ্ঠে শ্লোগান দিলাম- ‘জয় বাংলা’। এই অপারেশনে অন্যান্যদের মধ্যে অংশ নেয় আরশাদ, মান্নান, কে এম খলিলুর রহমান, আনিস, রশীদ, আব্দুল মান্নান, আক্কাস আলী, মোকছেদসহ আরো অনেকে। হঠাৎ খেয়াল হল সোবহান ভাইকে পাঠিয়েছি ওয়ারলেস সেটের কাছে, যাতে কেউ খুলনায় যোগাযোগ করতে না পারে তার ব্যবস্থা নিতে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থায়ীভাবে বিচ্ছিন্ন করার জন্য কয়েকজন রওয়ানা হলাম ওয়ারলেস অফিসের দিকে। আফজালুর রহমান এই সময় পাইকগাছা পিসিওর দায়িত্বে ছিল। মানসিক দিক থেকে আমাদের পক্ষে থাকলে জীবনের ভয় ও চাকুরীর মাথা ইতস্ততঃ করছিল। জোরে হুমকি দিলে তিনি আর বাধা দিলেন না। অতএব অতি সহজেই ওয়ারলেস সেট তুলে আনলাম। নৌকাযোগে মহানন্দে ফিরে এলাম কাজলনগরে। খুলনা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে পাইকগাছা থানা অপারেশনের ঘটনা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। কাজলনগরে ফিরে এলো কালাম, রফিক, অশোক, মুজিবরসহ আমাদেরকে নিয়ে আনন্দে কি জড়াজড়ি আর নাচানাচি। আর ইতিমধ্যে যে দরবার আর তদ্বির শুরু হয়ে গেছে যারা অস্ত্র পায়নি তারা কে কি অস্ত্র পাবে তাই নিয়ে। এ সময় সুবোল বড়দা অস্ত্র আনতে মুজিবনগরে ছিলেন, তাই এই অপারেশনে অংশ নিতে না পারায় দুঃখ তারা সারা জীবনের।
[৬৩৪] স ম বাবর আলী
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত