‘ক্র্যাক প্লাটুন’
ঢাকা মহানগরী ছিল ২নং সেক্টরের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার অন্তর্গত। সেক্টর কমান্ডার মেজর খালেদ মোশাররফ নিয়মত বাহিনীর পাশাপাশি কমান্ডো বা বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপাপ্ত একটি গেরিলা বাহিনী গড়ে তোলার প্রয়োজন অনুভব করেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল্লাহ খান বাদলকে ঢাকায় ফিরে গিয়ে বিশেষ গেরিলা দল গঠন করার লক্ষ্যে শিক্ষিত নিবেদিত প্রাণ ও দেশপ্রেমিক ছেলেদের সাথে কথা বলে কিছু সদস্য সরাসরি রিক্রুট করার জন্য দায়িত্ব প্রদান করেন। বাছাইকৃত গেরিলাদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়ার দায়িত্ব প্রদান করা হয় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের বিশিষ্ট বাঙালি অফিসার ক্যাপ্টেন এটিএম হায়দারকে। আগরতলা ক্যাম্পে স্বল্পমেয়াদী গেরিলা প্রশিক্ষণের কর্মসূচি শেষে মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী (মায়া)-এর নেতৃত্বে ১৬ জনের প্রথম দলটি একাত্তরের জুন মাসের প্রথম দিকে ঢাকা উদ্দেশ্যে রওনা হয়। চারটি করে হাতবোমা এবং ২০ পাউন্ড করে বিস্ফোরক নিয়ে অন্য কোন অস্ত্র ছাড়াই এই দলটি ৬ জুন তারিখে ঢাকা মহানগরীতে গোপনে প্রবেশ করে। ক্যাপ্টেন হায়দার মুক্তিযোদ্ধা বাদল এবং মেজর খালেদ মোশাররফের সরাসরি কার্যক্রম শুরু করে। পরবর্তীকালে আরো সদস্য যোগ দেয়ার ঢাকায় আসা প্রথম দল থেকে অধিনায়ক মনোনীত করে জুনের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা নগরীকে চারটি অংশে বিভক্ত করে সুপরিকল্পিত এবং সুসংগঠিত গেরিলা কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়। ঢাকা নগরীতে আন্তঙ্ক সৃষ্টিকারী ক্র্যাক প্লাটুনের দুর্ধর্ষ ও অকুতোভয় যোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্রে একের পর এক সফল অভিযান পরিচালনা করে মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখে,
‘ক্র্যাক প্লাটুন’ গঠন করা হয়েছিল প্রধান নিন্মলিখিত অবদান রাখে।
ক) রাজধানী ঢাকা শহরে মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতি সম্পর্কে জানান দিয়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ক্ষতিসাধন করা।
খ) পাকিস্তানি শাসনে ঢাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে অস্বাভাবিক এবং মোটেও নিরাপদ নয় তা দেশে বিদেশে প্রচার করা
গ) গেরিলা তৎপরতার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সাফল্য অর্জন করে ঢাকা শহরবাসী ও সকল মুক্তিযোদ্ধার মনোবল উজ্জীবিত করা।
ঘ) পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থান, চলাচল ও প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে হুমকির সম্মুখীন করে তাদেরকে সর্বক্ষণ সস্ত্রস্ত ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রাখা।
ঙ) পাকিস্তানি বাহিনী এবং তাদের মনোবল ভেঙে দেয়া।
চ) ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ফোরামে মুক্তিযুদ্ধকে প্রতিষ্ঠিত করা।
নাম পেশা
হাবিবুল আলম ছাত্র
জিয়া উদ্দিন আলী আহমেদ ছাত্র
মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী (মায়া) ছাত্র
কাজী কামাল উদ্দিন ছাত্র
কামরুল হক স্বপন ছাত্র
ফতেহ আলী চৌধুরী ছাত্র
শাহাদাৎ চৌধুরী বিশিষ্ট সাংবাদিক
মাসুদ সাদেক (চুল্লু) চাকরি
আব্দুস সামাদ ব্যবসায়ী
শহীদুল্লাহ খান বাদল ছাত্র
আবু সাঈদ খান কর্মকর্তা
গোলাম দস্তগীর গাজী ছাত্র
খালেদ ছাত্র
হানিফ মেকানিক
শফি ইমাম (রুমি) ছাত্র
হালিম চৌধুরী (জুয়েল) ছাত্র
বদিউল আলম (বদি) ছাত্র
আলতাফ মাহমুদ বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী ওসুরকার
আবদুল বাকের ছাত্র
সেকেন্দার হায়াৎ ছাত্র
আজাদ চাকরি
মোক্তার আহমেদ ব্যবসায়ী
মোহাম্মদ জিন্নাহ ব্যবসায়ী
নজরুল ইসলাম ব্যবসায়ী
হেলাল উদ্দিন ব্যবসায়ী
নীলু ছাত্র
পুলু ছাত্র
সিরাজ ছাত্র
রুনু ছাত্র
ড. তারিক মাহফুজ ছাত্র
মজিবর রহমান ছাত্র
আব্দুর রশীদ সর্দার
নীলু-২ –
কামাল চাকরি
বকুল ছাত্র
এ.এফ.এম.এ.হ্যারিস ছাত্র
হিউবার্ট এ. রোজারিও ছাত্র
মানু ছাত্র
ভুলু ছাত্র
উলফাত ছাত্র
মাসরুর আলী খান ছাত্র
আতিক ছাত্র
ওয়াছেফ ছাত্র
মোহাম্মদ শহীদ (মওলানা) ছাত্র
মানিক ছাত্র
মাহফুজুর রহমান (আমান) ছাত্র
ড. শেলী ছাত্র
কাসেম আনসারী ছাত্র
টুলটুল ছাত্র
হেলাল উদ্দিন ব্যবসায়ী
শরীফ –
কুদ্দুস ছাত্র
রিয়াজ আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত