You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.05.28 | কুমিল্লা রনাঙ্গন-৩, কুমিল্লা - সংগ্রামের নোটবুক

কুমিল্লা রনাঙ্গন-৩, কুমিল্লা

২৬ মে জগন্নাথ দিঘীর শত্রু অবস্থানের ওপর লে. ইমামুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন একটি গেরিলা দল রাত ১১ টায় অকস্মাৎ আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে ১টি প্লাটুন ২টি তিন ইঞ্চি মর্টার ও ২টি মিডিয়াম মেশিনগান ব্যবহার করা হয়। এ আক্রমণে পাকদের ১৯ জন লোক হতাহত হয়। ২৮ মে রাতে মুক্তিবাহিনীর একটি দল কুমিল্লার নিকট কালিকাপুর রেলওয়ে ব্রিজ উড়িয়ে দেয়। ঐ দিনই সকালে পাকিস্তানী সেনারা কুমিল্লার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়কের কাছে রঘুনাথপুরে একটি কোম্পানি নিয়ে আসে। এ কোম্পানিকে মুক্তিযোদ্ধারা সকাল সাড়ে ছ’টায় অতর্কিত অ্যাম্বুশ করে। পাকসেনারা আঘাত খেয়ে হয়ে বাজার ও গ্রামগুলি জ্বালিয়ে দেয়, এছাড়াও পাকিস্তানীরা তিন ইঞ্চি মর্টার এবং ১০০ এম এম ভারী মর্টারের সাহায্যে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির উপর গোলা ছুঁড়তে থাকে। একই দিন নায়েক গিয়াসউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি টহলদার দল মনোহরপুর নামক স্থানে শত্রুদের জন্য একটি আম্বুশ পেতে থাকে। পাকসেনাদের ১টি কোম্পানি কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রাস্তা দিয়ে জঙ্গলবাড়ির দিকে যাচ্ছিল। সকাল সাড়ে ৮টায় পাকসেনাদের কোম্পানিটি নায়েক গিয়াস উদ্দিনের অ্যাম্বুশের ফাঁদে পড়ে যায় এবং তাদের ২৫ জনের মত লোক হতাহত হয়। শত্রু সেনারা পিছু হটে এসে পুনরায় কামানের গোলার সাহায্যে আক্রমণের চেষ্টা করে তখন মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অবস্থান ত্যাগ করে। শত্রুরা পার্শ্ববর্তী মাগুরা, মণহরপুর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় এবং সাথে সাথে কামানের সাহায্যে গোলা ছুঁড়তে থাকে। এ দিনই সকাল ৬টায় কুমিল্লার দক্ষিণে রাজার মার দিঘির শত্রুদের ১টি বাংকারে ২জন মুক্তিবাহিনীর যোদ্ধা গপনে গিয়ে গ্রেনেড ছুড়ে ৪ জনকে হত্যা করে এবং তাদের রাইফেলগুলি নিয়ে আসে। ঐ দিনই সকালে লাকসাম-কুমিল্লা রেল লাইনের উপর আলীশ্বরের নিকট মাইনে পোতে ১টি রেলওয়ে ইঞ্জিন ও ২টি বগি লাইনচ্যুত করে।
[১৮] আবুল কাশেম হৃদয়

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত