You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.24 | কালুপুরের যুদ্ধ-৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জ - সংগ্রামের নোটবুক

কালুপুরের যুদ্ধ-৩, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

সাহাপুর গড়ে দখলদার পাকবাহিনী ও রাজাকারদের সম্মিলিত তান্ডবলীলার প্রতিশোধ নিতে রণ প্রস্তুতি করতে সাব-সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর তাঁর টাইগার বাহিনী নিয়ে ২৪ নভেম্বর সকালে কাশিয়াবাড়ি ডিফেন্সে উপস্থিত হন। সাথে এসেছিলেন ক্যাপ্টেন গিয়াসউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, লেঃ বজলুর রশিদ ও লেঃ কাইয়ুম খান। দুর্ধর্ষ সময় নায়ক ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর কাশিয়াবাড়ি ডিফেন্সের ৩ জন সহযোদ্ধা নিয়ে শত্রু পক্ষের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার জন্য রেকিতে বের হন। রেকিদের অন্যান্য যোদ্ধারা হচ্ছেন- (১) বাঙ্গাবাড়ি- শিসাটোলার তৈমুর রহমান, (২) পাবনা জেলার গোলাপ আলীনগর এলাকার শহীদ ঠাকুরের আম বাগানে পর্যবেক্ষণের সময় রেকিদল শত্রুপক্ষ পাকবাহিনী না-কি রাজাকার ছিল তা আঁচ করার আগেই শত্রুবাহিনীর গুলিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান শাহাদৎ বরণ করেন। ডিফেন্সে সতর্ক প্রস্তুত থাকা মুক্তিবাহিনী অস্ত্র গর্জে উঠে। শহীদ তৈমুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে পড়ে নেজাম মোগলের বাড়ীর পাশের মসজিদের সামনে জানাযা পড়ে বাঙ্গাবাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। এই রণ ক্ষেত্রে ওই দিন ৮ ঘন্টা যুদ্ধ চলেছিল। ভয়াবহ ওই যুদ্ধ ছিল হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রাণপণ কঠোর চ্যালেঞ্জ। ওই যুদ্ধে পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে ওঁৎ পেতে থাকা হানাদার বাহিনী ওঁ রাজাকারদের কঠোর মোকাবিলা করতে সক্ষম হন স্বাধীনতার আকাঙ্খায় মরণপণ সংগ্রামী তরুণ যোদ্ধারা। দীর্ঘস্থায়ী এই যুদ্ধে মুকুল নামে একজন দুঃসাহসী যোদ্ধাকে শত্রুবাহিনীকে গুলি আঘাত করলে মুমূর্ষূ অবস্থায় তাঁকে মোহদীপুরে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে তিনি মৃত্যু বরণ করলে ঐখানেই তাঁকে সমাহিত করা হয়। এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর ২ জন বীরসেনানী শাহাদৎ বরণ করলেও মুক্তিযোদ্ধাদের কঠোর জবাবের মুখে হানাদার বাহিনী ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে পিছু হটতে বাধ্য হয়।
ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর যুদ্ধ পরিস্থিতি সম্পর্কে সেক্টর কমান্ডার লেঃ কর্নেল কাজী নুরুজ্জামানকে ওয়ারলেশ মারফত অবহিত করেন। সেক্টর কমান্ডার সাহাপুর গড় ট্রাজেডী ও বোয়ালিয়া ইউনিয়নের গণহত্যার জন্য পূর্ব থেকে ক্ষুব্ধ ছিলেন এবং তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় মোহদীপুর হয়ে পূর্ব প্রস্তুতি নেয়া মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কাশিয়াবাড়ি ডিফেন্সে আগমন করেন।
[৫৮৭] মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত