You dont have javascript enabled! Please enable it!

কালেঙ্গা পাহাড় আক্রমণ, হবিগঞ্জ

চুনারুঘাট সদর থানার প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে ভারত সীমান্তের কাছাকাছি কালেঙ্গা পাহাড়। ভারতের বাঘাইবাড়ি ক্যাম্প হতেও প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরত্ব। ৩ নম্বর সেক্টরের বাঘাইবাড়ি সাব সেক্টর থেকে প্রায় সকল মুক্তিযোদ্ধারা এই জঙ্গল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে গেরিলা তৎপরতা চালাত। পাকিস্তানী বাহিনী তাদের দোসরদের মাধ্যমে খবর পেয়ে কোনোদিন রশিদপুর আবার কোনোদিন রাণিগাঁও অথবা চুনারুঘাট দিয়ে এখানে আসত মুক্তিযোদ্ধাদের গতিরোধ করার নিমিত্তে। ২৪ সেপ্টেম্বর ক্যাপ্টেন আজিজের নেতৃত্বে বাঘাইবাড়ি ও আশ্রমবাড়ি সাব সেক্টরেরে মুক্তিযোদ্ধারা যৌথভাবে পাকসেনাদের উপর হামলা চালিয়ে একজন অফিসারসহ ৬২ জন পাক সেনাকে হত্যা করে। এই অভিযানে ক্যাপ্টেন আজিজুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে ইউনুছ চৌধুরী (বহুলা), সরুক মিয়া চৌধুরী (পাণ্ডাইল), সুবেদার মোঃ আবদুস শহীদ (চুনারুঘাট উত্তর বাজার), সুবেদার শামসুল হুদা (মশাজান) প্রুমুখ মুক্তিযোদ্ধা বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এ প্রসঙ্গে ডক্টর সুকুমার বিশ্বাস একজন সামরিক কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে লিখেছেন, “এই এ্যামবুশ এত চমৎকার হয়েছিল যে, পাকিস্তানীরা পজিশন নেয়ার সময় পর্যন্ত পায়নি। ফলে এক এক বুলেটে এক একজন খান সেনা ধরাশায়ী হয়। এমন সফলতার মাঝেও মুক্তিবাহিনী একজন শহীদ হন। নায়েক আবদুল মান্নান এত বেশি উত্তেজিত হয়ে পড়েছিলেন যে, তিনি দাঁড়িয়ে জয়বাংলা বলে চিৎকার করে শত্রু খতম করতে থাকে। এতেও তিনি ক্ষান্ত না হয়ে কমান্ডারের কাছে বাহবা নেয়ার জন্য হঠাৎ করেই ক্রলিং করে শত্রু ব্যূহের দিকে অগ্রসর হন জীবিত খান সেনা ধরে আনার জন্যে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। পাকিস্তানীদের একটি বুলেট নায়েক আবদুল মান্নানের দেহ বিদীর্ণ করে দেয়।
[৬৩] মাহফুজুর রহমান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!