You dont have javascript enabled! Please enable it!

কালেঙ্গা ফরেস্ট বিট পয়েন্টের অ্যাম্বুশ, হবিগঞ্জ

জুলাই মাসের ৭ তারিখ ৩ নম্বর সেক্টরেরে অধীনে ৩ নম্বর সাব সেক্টর বাঘাইচড়া সেক্টর কমান্ডার এজাজ আহমদ চৌধুরীর নির্দেশ গেরিলা বাহিনী কালেঙ্গা ফরেস্ট বিট পয়েন্টে একটি সফল গেরিলা হামলার নেতৃত্বে দেন আনিছুল বারী চৌধুরী। সহ অধিনায়ক ছিল বামেশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। এজাজা আহমদ চৌধুরী ঘটনার পরের দিন গুপ্ত বার্তাবাহকের মাধ্যমে জানতে পারেন পাক বাহিনীর একটি দল চুনারুঘাট থানাধীন কালেঙ্গা ফরেস্ট বিটে আসবে এবং এখান থেকে ভারতীয় সীমান্তের খবরাখবর সংগ্রহ করবে। পরের দিন সকাল ৮টার সময় ৪টি সমসংখ্যক ভাগে বিভক্ত করে প্রতিটি ভাগে একটি এসএমজি, ১টি করে এসএলয়ার, ৬টি থ্রি নট থ্রি রাইফেল এবং প্রত্যেককে ২টি করে গ্রেনেড দিয়ে ঘটনাস্থলে পাঠান। আক্রমণের মূল দায়িত্ব দেয়া হয় পুলিশ বাহিনীর সদস্য মোঃ রফিক-এর উপর। গেরিলা গ্রুপ সকাল ১০টায় ত্রিপুরার খোয়াই মহকুমার বাছাইবাড়ি সীমান্তের উদ্দেশ্যে ট্রাকযোগে রওনা হয়। দুপুর পৌনে এগারটার সময় ট্রাক থেকে নেমে সীমান্ত পার হয়ে কালেঙ্গার পথে পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হয়ে ঘটনাস্থলে সকাল ১২টায় পৌঁছে। পূর্ব সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা অনুযায়ী পাক বাহিনী আগমণের রাস্তাটিকে কেন্দ্র করে চারদিকে অ্যামবুশ পেতে অপেক্ষা করতে থাকে মুক্তিযোদ্ধারা। কিছুক্ষণ পর রশিদপুরের দিকে থেকে ছোট বড় ও মাঝারি ধরনের ৩ট গাড়তে আনুমানিক ৪০/৫০ জন পাকিস্তানী বাহিনী আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রে সুসজ্জিত অবস্থায় অতি সতর্কতার সাথে কালেঙ্গা ফরেস্ট বিট পয়েন্টের দিকে আসতে থাকে। গাড়ি তিনটি এ্যাম্বুশ এরিয়ার নিকটবর্তী এলে গাড়িগুলোর উপর প্রায় ৬০টি গ্রেনেড নিক্ষেপ করে মুক্তিযোদ্ধারা। গ্রেনেডের আঘাতে গাড়িগুলো বিকল হয়ে যায়। পাকিস্তানী বাহিনী গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকে। তাদের লক্ষ করে এসএমজি থেকে ব্রাশ ফায়ার এবং থ্রি নট থ্রি দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করে যোদ্ধারা। প্রায় এক ঘন্টা উভয় পক্ষ থেকে গোলাগুলির পর কভারিং ফায়ারেরে মাধ্যমে পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সবাই। এতে পাক সেনাদের ৬জন নিহত ও ৩৫ জন আহত হয়।

[৬৩] মাহফুজুর রহমান

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!