কালীশূরী ও পানপট্টির যুদ্ধ, বরিশাল
বরিশালের বাউফলের পঞ্চব আলী জুন মাসে মুক্তিবাহিনী গঠন করেন। তিনি অনেক পাকিস্তানী দালাল ও রাজাকার হত্যা করে পাক সেনাদের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করেন। তিনি কালীশূরী বন্দরের নিকট একটি লঞ্চ আক্রমণ করে কয়েকজন পাকসেনা, পুলিশ হত্যা করে ও অস্ত্র উদ্ধার করেন। প্রতিশোধ নেবার জন্য পাক সেনারা কালীশূরী বন্দরটি পুড়িয়ে ফেলে। কালীশূরী বন্দরে ছিল পাক সেনা ও রাজাকারদের ক্যাম্প। পঞ্চব আলী ক্যাম্প আক্রমণ করে কয়েকজন পাক সেনা ও রাজাকার হত্যা করেন। পটুয়াখালী অঞ্চলে গলাচিপার আবদুর রব সুন্দরবনের সাব সেক্টর কমান্ডার ক্যাপ্টেন জিয়াউদ্দীনের কাছ থেকে অস্ত্র এনে দল গঠন করেন এবং অন্যান্য দলকে অস্ত্র সরবরাহ করেন। কিছুদিন পর কমান্ডার নুরুল হুদা ও শওকত মুজিব নগর থেকে একটি দল নিয়ে গলাচিপা পৌঁছেন এবং পানপট্টি কমিউনিটি সেন্টারে ক্যাম্প স্থাপন করেন। ২৬ নভেম্বর পাকবাহিনীর মেজর ইয়াহিয়া পটুয়াখালী থেকে এক বিরাট বাহিনী নিয়ে পানপট্টি আক্রমণ করে। নুরুল হুদা ও আবদুর রব তাদের বাহিনী নিয়ে পাক সেনাদের আক্রমণ প্রতিহত করতে থাকেন। তাদের সহযোদ্ধাদের মধ্যে ছিলেন শওকত, খোকন, মোস্তফা, রতন, ভুদেব, গোমেজ প্রমুখ। সকাল হতে বিকেল পর্যন্ত যুদ্ধ চলে। পাক সেনাদের অনেক নিহত ও আহত হয়। পরিশেষে পাকবাহিনীর মেজর ইয়ামিন তার বাহিনী নিয়ে পানপট্টি থেকে পালিয়ে আসে। পানপট্টি যুদ্ধে প্রমাণিত হয় যে, শত্রুকে মোকাবেলা করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠেছে।
[৫৭] সিরাজ উদ্দীন আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত