কাথুলির যুদ্ধ-৩, মেহেরপুর
জুলাই মাসের ৩ তারিখে মুক্তিযোদ্ধাদের দুটি পৃথক দল কালাচাঁদপুর এবং ইছাখালি এলাকায় পাকসেনা অবস্থানের ওপর গুলিবর্ষণ করে। তারাও পাল্টা আক্রমণ করে। হতাহতের খবর জানা যায়নি। পরদিন কমান্ডার শহীদুল ইসলামের নেতৃত্বে কাশেম, রশিদ, গিয়াস, জলির, রাজ্জাক, সিরাজসহ মোট ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা গাড়াবাড়িয়াতে রাস্তার ওপরে মাইন স্থাপন করে। কিছুক্ষণের মধ্যেই মেহেরপুর থেকে পাকসেনাদের একটি জপ কাথুলির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে গাড়াবাড়িয়ায় এলে মাইন বিস্ফোরোণ ঘটে বিকট শব্দে। জিপ উলটে যায়। একজন অফিসারসহ ৬ জন পাকসেনা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। জুলাই মাসের ৫ তারিখেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে রাজনগরে। তবে সেখানে কোনো হতাহত হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান লারা, ইদ্রিস আলী, ম্যাজিক আব্দুল এবং রাজনগর এলাকার আরো কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা রাজনগর ব্রিজের কাছে একটি ডিনামাইট সেট করে। সেটি যথারীতি বিস্ফোরিতও হয়। কিন্তু ডিনামাইটটি যথস্থানে সেট না হবার কারণে পুরো ব্রিজ ধ্বংস না হয়ে ব্রিজের পশ্চিম দিকের ১০/১২ গজ অংশ ক্ষতিসাধিত হয়। এর কিছুক্ষণ পর চুয়াডাঙ্গা থেকে পাকবাহিনীর একটি জিপ ও একটি ট্রাক ব্রিজ পর্যন্ত এসে আবার চুয়াডাঙ্গায় ফিরে যায়। এই একই দিনে হাবিলদার আব্দুর রউফের নেতৃত্বে একদল মুক্তিযোদ্ধা অত্যন্ত সন্তর্পণে এসে কাথুলি বিওপিতে অতর্কিত হামলা চালায়। সেখানে তখন ৮ জন পাকসেনা কাজ করছিল। মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত হামলায় কমপক্ষে ৩ জন পাকসেনা খতম হয়। পরদিন কাথুলি পোষ্ট অফিসের কাছে সেন্ট্রির দায়িত্ব পালনকালে চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা একজন পাকসেনাকে গুরুতরূপে জখম করে।
[১০৩] রফিকুর রশীদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত