কাজী আব্দুল মজিদ খান, মেজর জেনারেল (১৪ ডিভিশন, পিএ-১৭৪৩) ভৈরব ও সাদুল্লাহ খান এস যে, ব্রিগেডিয়ার (২৫ ফ্রন্টিয়ার ফোর্স, পিএ-৩৫৮৪)
মোহাম্মদ আব্দুলাহ খান, মেজর (পিটিসি-৫৯১১)
সাদেক নেওয়াজ, মেজর
জাভেদ ইকবাল, ক্যাপ্টেন (৩৩ বেলুচ, পিএসএস-৬৯১০)
ইউনিটঃ ২৭ ব্রিগেড
স্থানঃ ব্রাক্ষণবাড়িয়া
অপরাধঃ ১২ এফএফ, ৩৩ বেলুচ ও ২২ আজাদ কাশ্মীরের সমন্বয়ে গঠিত ২৭ ব্রিগেড ব্রাক্ষণবাড়িয়া, ভৈরব, আখাউড়া, আশুগঞ্জ ও নরসিংদী অঞ্চলের দায়িত্বে ছিল। ব্রাক্ষণবাড়িয়াতে পাকবাহিনীর এই সদস্যরা ব্যাপক হত্যাকাণ্ড, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে। ব্রাক্ষণবাড়িয়া কলেজ প্রাঙ্গন, ওয়াপদা প্রাঙ্গন, দাতিয়ারা, করুলিয়া খালের পাড়, উজানির সেতু প্রভৃতি এলাকায় এরা দিনের পর দিন অসংখ্য বাঙালীকে ধরে এনে হত্যা করেছে। মে মাসে সরাইল থানার শাহবাজপুর এলাকা আক্রমণ করে পাকবাহিনী যাকে সামনে পেয়েছে তাকেই গুলি করেছে। নির্বিচারে জ্বালিয়ে দিয়েছে ঘরবাড়ি। সেদিন বৈকুণ্ঠ দাস, মুক্তিময়ী দাসসহ অন্তত ৯ জন নিরীহ গ্রামবাসী এদের গুলিবর্ষণে শহীদ হন।
১৯৭১ সনের ২১ নভেম্বর পাকবাহিনীর মেজর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ খান ব্রাক্ষণবাড়িয়া সাবজেল থেকে ৫০ ব্যক্তিকে বের করে এনে পৈরাতলা ব্রিজের নিকট হত্যা করে।
৬ ডিসেম্বর ব্রিগেডিয়ার সাদুল্লাহ খান ও মেজর আব্দুল্লাহ শহরের শিক্ষক, ডাক্তার, উকিল ও নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীসহ ৪০ জন বুদ্ধিজীবিকে ব্রাক্ষণবাড়িয়া সামরিক সদর দপ্তরে ডেকে নিয়ে যায়। পরে তাঁদেরকে রাতের আঁধারে কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে এ ছাড়াও এরা পার্বতীপুর ও আশুগঞ্জের আশেপাশের এলাকায় সাদউল্লাহ-র নির্দেশে ব্যাপক গণহত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
মেজর সাদেক নেওয়াজ ছিল ব্রাক্ষণবাড়িয়ার কোম্পানি কমান্ডার। সেও এখানকার হত্যাকাণ্ড সমূহের সঙ্গে জড়িত ছিল।
সাক্ষীঃ ননীগোপাল মল্লিক, বাদল মিয়া, মোঃ শামসু মিয়া ও গোলাম হোসেন।
মেজর জেনারেল মজিদ যুদ্ধকালে ভৈরব সেতু উড়িয়ে দেয়। ’৭১-এর মার্চের শেষ সময় থেকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপর্ক্মের নেতৃত্ব দিত মেজর জেনারেল মজিদ খান।
নরসিংদী টেলিফোন এক্সচেঞ্জ ছিল পাকবাহিনীর ক্যাম্প। বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবতীদের ধরে এনে পাকিসেনারা নরসিংদী টেলিফোন এক্সচেঞ্জে আটকে রেখে পাশবিক নির্যাতন চালাত। যারা নরপশুদের কাচে আত্মসমর্পণ করত না তাদের কঠোরভাবে হত্যা করা হতো। নির্যাতন শেষে তাদের খাটরা পুলের কাছে এনে হত্যা করত।
মেজর জেনারেল কাজী আব্দুল মজি খান, ব্রিগেডিয়ার সাদুল্লাহ খান। মেজর মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ খান, মেজর সাদেক নেওয়াজ, ক্যাপ্টেন জাভেদ ইকবাল ও তাদের সহযোগীদের উপরোক্ত অঞ্চল সমূহের গণহত্যা, বুদ্ধিজীবী হত্যা, সম্পদ ধ্বংস সহ সকল প্রকার মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা. এম. এ. হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত