কাজীপুরের যুদ্ধ, মেহেরপুর
কাজীপুর এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারা ২৬ সেপ্টেম্বর পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে এক বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের অংশ নেয়। কাজীপুর-সাহেবনগরের সজনিগাড়ি মাঝে অবস্থানরত ৪০ জন মুক্তিযোদ্ধা খবর পায়, কিছুক্ষণের মধ্যে বামুন্দী থেকে পাকবাহিনী আসবে এই এলাকায়। মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিরোধের পরিকল্পনা করে। তিনটি ভাগে বিভক্ত হয় পজিশন নেয়। আব্দুল হানিফের গ্রুপে বেতবাড়িয়ার ওয়াজেদ, হিসাব, সেকেন্দার, পিয়ার, আমিরুল, লালচাঁদ, শহীদুল, রেজাউল, অহিদুল, আহম্মদ আলী, সিরাজুল জামাত, পাতান, তোফাজ্জেল, মোজাম্মেল ও গোলাম মোস্তফা। আব্দুল ওহাবের গ্রুপে কাজীপুরের মোজাম্মেল, কায়েক, আবুবকর, এনামুল, ওমর, সালাম, গোলাম হোসেন, পাঞ্জাব আলী, আজিমুদ্দীন ও নূরুল হক। আব্দুর রহমানের গ্রুপে মামুনুর রশীদ, ফরহাদ কাজী, সোহরাব হোসেন, আব্দুর রশীদ, আব্দুল লতিফ, আব্দুস হানিফ ও গোলাম মোস্তফা পাকবাহিনী আগমনের বিষয়ে নিশ্চিত খবরের জন্য সাহেবনগরে হাজীদের বাগান পর্যন্ত এগিয়ে যাবার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই লক্ষ্য করে পাকসেনারা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে বাগান ঘিরে ফেলছে। এ অবস্থায় তারা দু’জন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ফিরে যাবার পথ খুঁজতে থাকে। কিন্তু ৫/৬ জন পাকসেনাকে গোলাম মোস্তফার দিকে এগিয়ে আসতে দেখে মুক্তিযোদ্ধা আবুবকর দূর থেকেই ঐ পাকসেনাদের উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়ে। এবার সকল পাকসেনাই অতিদ্রুত পজিশন নেয়। এরই এক ফাঁকে মোস্তফা এবং হানিফ সরে আসতে সক্ষম হয়। শুরু হয় পারস্পরিক গুলিবর্ষণ। শিকারপুর থেকে আর্টিলারি সাপোর্ট আনার জন্য পাঠানো হয় সোহরাব হোসেনকে। সে ব্যর্থ হয়। তবু মুক্তিযোদ্ধারা ৩ ঘন্টার টানা যুদ্ধে পাকবাহিনীকে কোণঠাসা করে রাখে। এ যুদ্ধে ২ জন পাকসেনা ও ৪ জন রাজাকার খতম হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। পাকসেনাদের এলোপাতারড়ি গুলিতে কাজীপুরের একজন সাধারণ মহিলা আহত হয়।
[১০৩] রফিকুর রশীদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত