কাকিনা ও আদিতমারি আক্রমণ, লালমনিরহাট
লালমনিহাট জেলার কালিগঞ্জ থানায় কাকিনা রেলস্টেশন অবস্থিত। একই জেলার আদিতমারী থানার নিকটে অপর একটি রেলস্টেশনে আদিতমারী। আলমনিরহাট থেকে রেল লাইনটি আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতিবান্ধা হয়ে পাটগ্রামের বুড়িমারীতে শেষ হয়। এই রেল লাইনের উভয় পাশে পাকিস্তানীদের অনেক ক্যাম্প ছিল। লাল্লমনিরহাত থেকে শত্রু তার প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ, রসদ এবং জনবল কাম্পগুলোতে পরিবহন করে তাদের শক্তি বৃদ্ধি করত। শত্রুর শক্তি, মনোবল ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য মুক্তিযোদ্ধারা কাকিনা ও আদিতমারীতে আক্রমণের পরিকল্পনা করে। নভেম্বর মাসের ঘটনা। মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল কাকিনার নামুরী নামক স্থানের উত্তরে বাশঝাড় ও গাছের আড়ালে অবস্থান নেয়। মুক্তিযোদ্ধাদের অপর দলটি আদিতমারী রেলস্টসনের একটু উত্তর-পশ্চিমে অবস্থান নেয়। প্রথম দলের নেতৃত্ব দেন আ. মান্নান এবং দ্বিতীয় দলের নেতৃত্ব দেন মোঃ তাজুল ইসলাম। পাকিস্তানীদের নিয়ে রেলগাড়িটি আদিতমারী রেলস্টসনের অতিক্রম করার সাথে সাথেই মুক্তিযোদ্ধার দ্বিতীয় দলটি অতর্কিত আক্রমণ করে। দুই পক্ষে তুমুল গুলিবিনিময় হয়। পাকিস্তানীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে রেল লাইনের দক্ষিণ পাশ দিয়ে পায়ে হেঁটে দক্ষিণে লালমনিরহাটে দিকে উত্তরে কাকিনার দিকে অগ্রসর হয়। পাকিস্তানীরা কাকিনায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রথম দল কর্তৃক আক্রান্ত হয়ে ফিরে আসতে বাধ্য হয়। পাকিস্তানীদের অপর দলটিও মুক্তিযোদ্ধাদের দ্বিতীয় দল দ্বারা আক্রান্ত হয়ে উলটা দিকে ফিরে আসে। অতঃপর পাকিস্তানীরা একত্রিত হয়ে পুনরায় রেলগাড়িতে উঠে লালমনিরহার ফেরত আসে। এই যুদ্ধে ৫ জন পাকিস্তানী নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত