উত্তর সামুরা অপারেশন (পটিয়া-বোয়ালখালী বর্ডার), চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামেরে পটিয়া ও বোয়ালখালী থানা দুটির সীমান্তে উত্তর সামুরা অবস্থিত। এই উত্তর সামুরাতেব মুক্তিবাহিনীর একটি গুপ্তাশ্রয় কেন্দ্র ছিল। ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে কমান্ডার শাহ্ আলমের নেতৃত্ব ২০/২২ জনের একটি মুক্তিযোদ্ধা দল জুলাই মাসের শেষদিকে ভোর সাড়ে চারটায় গুপ্তাশ্রয়ে এসে পৌঁছেন। পূর্ব থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের জানা ছিল, এলাকায় রাজাকারদের প্রভাব বেশ প্রবল এবং তাদের অপতৎপরতা সর্বত্র। ফলে মুক্তিযোদ্ধারা গুপ্রাশ্রয় কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য আসার পথে ৪/৫ জনের একটি প্রহরীদল নিয়োগ করেন। তবে মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের কথা রাজাকারদের নিকটে পৌঁছে যায়। প্রায় ৮/১০ জন রাজাকার মুক্তিযোদ্ধাদের এ অবস্থানটি ধ্বংস এবং মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করার লক্ষ্যে ওই দিনই সকাল ছয়টায় ওই গুপ্তাশ্রয়ের দিকে এগিয়ে আসে। প্রহরী দল অগ্রসরমান শত্রুদলকে দেখতে পায়। ওদের আক্রমণ প্রতিহত করতে প্রহরী দল দ্রুত অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের স্ব-স্ব অবস্থান সংকেত পাঠায় এবং নিজেরাও নির্দিষ্ট জায়গায় অবস্থান গ্রহণ করে। ইতোমধ্যে অন্য মুক্তিযোদ্ধারও এসে অবস্থান গ্রহণ করেন। রাজাকাররা মুক্তিবাহিনীর অস্ত্রের কার্যকর ক্ষমতার মধ্যে এলে তাদের ওপর অতর্কিতে গুলি চালানো হয়। দুপক্ষের মধ্যে কিছুক্ষণ গোলাগুলির পর রাজাকাররা পিছু হটতে বাধ্য হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ছিল ১টি এলএমজি,১টি স্টেনগান, ২০/৩০টি রাইফেল। রাজাকারদের সাথে গোলাগুলি বিনিময়ে ৩জন রাজাকার ঘটনাস্থলে মারা যায় এবং ৩টি ৩০৩ রাইফেল মুক্তিযোদ্ধাদের হস্তগত হয়। কমান্ডার শাহ্ আলম গ্রুপের তৎক্ষণিক হলেও এটিই ছিল প্রথম এবং সফল অপারেশন। এ সাফল্য তাদের মনোবল, দৃঢ়তা ও সাহস ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
[৫৯৭] কে. এম. আহসান কবীর
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত