উদালিয়া চা-বাগান, চট্টগ্রাম
উদালিয়া চা-বাগান ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান আশ্রয়কেন্দ্র। এছাড়া উত্তর মাদ্রাসা ও ফতেয়াবাদে মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক আশ্রয়কেন্দ্র ছিল এখানে। অনেক ব্যক্তি একই সাথে পাকবাহিনীর সাথে সম্পর্ক রাখার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদেরকেও আশ্রয় দিতেন। এর মধ্যে অন্যতম ছিলেন ফতেয়াবাদের সৈয়দ আহমদ মিয়া চেয়ারম্যান। ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে গেরিলা কর্মকাণ্ড পরিচালনা জন্য বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাগণ চট্টগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রবেশ করে। সাধারণ জনতা কিংবা মুক্তিযোদ্ধা কারো জন্যই চট্টগ্রাম থেকে ভারত যাওয়া-আসার সহজ করতে হতো। কারণ চট্টগ্রাম থেকে ভারত যাবার পথে ছিল পাহাড়-সারি। যুদ্ধের বীভৎসতার চেয়ে দুর্গমপথের ক্লান্তি ও বিপদ কোনভাবে কম ছিল না। দীর্ঘ পথপরিক্রমার মাধযে শারীরিক, মানসিক ও ভৌগলিক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রমের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত তাঁদেরকে শত্রুর তীক্ষ্ণ নজরও এড়িয়ে চলতে হয়েছে। কখনো বা শত্রুর আক্রমণের শিকারেও পরিণত হতে হয়েছে। আবার তাঁদেরকে শত্রুর মোকবেলা করতে হয়েছে। এসব প্রতিকূল উত্তরণে মুক্তিযোদ্ধাগণ স্বউদ্ভাবিত বিভিন্ন কলাকৌশল অবলম্ভন করেছিলেন। শত্রুর পরিবেষ্টিত দেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করার পর পথক্লান্ত যোদ্ধাদের জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন ছিল নিরাপদ আশ্রয়স্থল। সেসঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদার সরবরাহ (লজিস্টিক সার্পোট) চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে আপামার জনতা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মুক্তিযোদ্ধাদেরকে রসদপত্র সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় আশ্রয় ও সহায়তা প্রদান করেছিলেন। এসব আশ্রয় ও সহায়তা না পেলে মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে দক্ষতার সাথে গেরিলা তৎপরতা পরিচালনা করা সম্ভব হতো না-এই বক্তব্য অতুক্তি নে।
[৫৯৭] সংকলন
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত