এম. কে. বাশার, এয়ার ভাইস মার্শাল, বীর উত্তম
এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ খাদেমুল বাশার ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর বগুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম হাসমতউল্লাহ এবং মাতা হাসিনা খাতুন।
মোঃ খাদেমুল বাশার সাতক্ষীরা প্রাণনাথ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং রাজশাহী কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন।
তিনি ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে ফ্লাইং ক্যাডেট হিসাবে যোগদান করে এবং বিমান একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েশন লাভের পর ফাইটার স্কোয়াড্রনে যোগ দেন। ১৯৭০ সালে তাঁকে ঢাকায় স্কোয়াড্রন কমান্ডার হিসেবে নিয়োগ করা হয় এবং একই সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে তিনি উইং কমান্ডার পদে উন্নীত হন।
এয়ার ভাইস মার্শাল বাশারের পরিবারের সবাই পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে জড়িত ছিলেন। এই কারণে জনাব বাশারের বড় ভাই, ভগ্নীপতি, মা ও বোন পাকবাহিনীর হাতে বন্দি হন ও ঢাকায় কয়েকমাস বন্দি জীবনযাপন করনে।
১৯৭১ সালে তৎকালীন উইং কমান্ডার এম এ বাশার সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং রংপুর ও দিনাজপুর নিয়ে গঠিত ৬ নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার হিসাবে উক্ত এলাকায় সাফল্যের সাথে যুদ্ধ পরিচালনা করেন।
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে জীবিত ব্যক্তিদের সর্বোচ্চ খেতা ‘বীর উত্তম’ উপাধি প্রদান করেন। মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য তিনি এই উপাধি লাভ করেন।
স্বাধীনতা লাভের পর তিনি রংপুরে ব্রিগেড কমান্ডার নিযুক্ত হন এবং ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে গ্রুপ ক্যাপ্টেন পদে উন্নীত হন। ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে তিনি বাংলাদেশে বিমান বাহিনীতে ফিরে আসেন এবং ঢাকা বিমান ঘাঁটির অধিনায়ক নিযুক্ত হন। এই পদে থাকাকালে তিনি যুদ্ধ বিদ্ধস্ত ঘাঁটি পুনর্গঠন করেন। ১৯৭৩ সালের অক্টবর মাসে তাঁকে এয়ার কমোডর পদে উন্নীত করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর সহকারী স্টাফ প্রধান পদে নিযুক্ত করা হয়।
১৯৭৬ সালের ১ মে তাঁকে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করা হয় এবং ৩ মে তাঁকে এয়ার ভাইস মার্শাল পদে উন্নীত করা হন। একই দিনে তিনি উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক নিযুক্ত হন।
১৯৭৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিমান বন্দরে (তেজগাঁও) সকাল ৯টা ২৩ মিনিটে এক বিমান দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন।
[৭৩] রিয়াজ আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত