You dont have javascript enabled! Please enable it!

এম. এ. হালিম, বীর প্রতীক

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালীদের উপর পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী ও সৈন্যের শাসন শোষণ নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতবাদী ছাত্র ছিলেম এম.এ.হালিম। এম এ হালিম যখন সিলেট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ বর্ষের ছাত্র, তখন দেশে আওয়ামী লীগের ৬ দফা ও ছাত্র সমাজের ১১ দফা আন্দোলন তুঙ্গে। পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অসহযোগ আন্দোলন ও প্রতিরোধ যুদ্ধে সক্রিয় ছিলেন। ১০ মে ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তখন তার বয়স ছিল ১৯ বছর। ভারত অস্ত্র প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। অস্ত্র প্রশিক্ষণ শেষ করে ৫ নং সেক্টরে যোগদান করেন। বৃহত্তর সিলেট জেলার পশ্চিমাঞ্চল সিলেট ডাউকি সড়ক হতে সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ জেলার সীমান্ত পর্যন্ত ৫ নং সেক্টরের অধীন হিল। শিলং ৫ নং সেক্টরের সদর দপ্তর ছিল। যুদ্ধ কালীণ মেজর মীর শওকত আলী সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। এম এ হালিম এর সাব সেক্টর কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন এ এস হেলাল উদ্দিন ও লেঃ আব্দুর রউফ। নিজে গ্রুপ কমান্ডার ছিলেন। ছাতকের দুরবিন ঢিলা, টেংরাটিলা, বালিউরা, জাওইয়ার ব্রিজে গেরিলা হজামলা ও সম্মুখ যুদ্ধে সাহসিকতার পরিচয় দেন। জুন মাসে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার হাধারঢিলা আক্রমণের সময় আহত হন। স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য এম এ হালিম, ‘বীর প্রতীক, উপাধিতে ভূষিত হন। এম এ হালিম রাঙ্গামাটি জেলার কাপ্তাই থানার কর্ণফুলী পেপার মিলস এ সহকারী প্রকৌশলী পদে চাকরি করেন। পিতা মরহুম আব্দুল কুদ্দুস, মাতা জুবেদা খাতুন, গ্রাম- টেংরাগড়, থানা-দোয়ারবাজার, জেলা-সুনামগঞ্জ। স্ত্রী সুরাইয়া বেগম এ এস সি চাকরি করেন। ১ ছেলে ২ মেয়ে। ছেলে মোঃ মোর্শেদ আলম ডাক নাম লিমন এস এস সি, মেয়ে ফেরদৌসী আক্তার, ডাক নাম নিপা, ৯ম শ্রেণী ফারহানা আক্তার, ডাক নাম দীপা ৪র্থ শ্রেণী। ১ ভাই ও ২ বোন। ভাই মোঃ সুরুজ মিয়া, বোণ আনোয়ারা বেগম, দেলোয়ারা বেগম। এম এ হালিম এর যুদ্ধের সময়কার স্মরণীয় ঘটনা, ১৯৭১-এর অক্টোবরের প্রথম দিকে রেকি করতে মাদ্রাসার ছাত্রদের কুলি হয়ে ২ জন সহযোদ্ধাসহ অস্ত্র নিয়ে দিনের বেলায় পাকিস্তানী সৈন্যের ক্যাম্প এলাকায় প্রবেশ এবং রাতে ঐ ক্যাম্প আক্রমণ। ঐদিন রাতে জাওয়া ব্রিজ উড়িয়ে দেয়া, ১১ জন পাকিস্তানী সৈন্য নিহত, অনেক রাজাকারের আত্মসমর্পণ, অনেকে হাতিয়ার হস্তগত। ১৪ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জে পাকিস্তানী সৈন্যের বিরুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে লতিফ নামে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে পাকিস্তানী সৈন্যরা ধরে নিয়া যাবার সময় তার চিৎকার আজও কানে ভাসে। এম এ হালিম কৈশোরে ফুটবল ও ভলিবল খেলায় পারদর্শী ছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে এম এ হালিম বীর প্রতীক এর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
[৭৩] রিয়াজ আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!