You dont have javascript enabled! Please enable it!

এলাঙ্গি যুদ্ধ, যশোর

২ ডিসেম্বর, ১৯৭১। প্রায় ৫০ জনের একটি পাকিস্তানী দল বৃহত্তম যশোর জেলার ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানা সদর থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার পূর্বে কালিগঞ্জ-কোচাঁদপুর সড়ক সংলগ্ন এলাঙ্গি গ্রাম আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণে কামার আলী নামে একজন গ্রামবাসী নিহত হন এবং এলোপাতাড়ি গুলিতে অনেকেই আহত হন। অল্প সময়ের মধ্যেই গ্রামটি প্রায় জনশূন্য হতে যায়। পরে জনমানবহীন এই গ্রাম পাকিস্তানী সৈন্যরা আস্তানা গাড়ে।
৩ ডিসেম্বর ১৯৭১ ভারতীয় সৈন্য এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত মিত্রবাহিনী ঝিনাইদহের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো পুনরুদ্ধারে আক্রমণ শুরু করেন। এ পর্যায়ে ৪ ডিসেম্বর তাঁরা এলাঙ্গি আক্রমণ করেন। ঐ দিন সকাল ৯/১০ টায় পাকিস্তানী সৈন্যরা যখন প্রায় সবাই আহাররত ছিল তখন মিত্রবাহিনী উপর্যুপুরি আক্রমণ চালায়। মুখের ভাত ফেলে পাকিস্তানী মিত্রবাহিনী ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু মিত্রবাহিনীর প্রচণ্ড আঘাতের মুখে তাঁরা প্যাঁজা তুলোর মতো উড়ে যায়, মারা যায় ৩০ জন পাকিস্তানী। বাকিরা কালীগঞ্জের তালেশ্বর গ্রামে দিকে পিছু হটাতে থাকে। যাবার সময় তাঁরা ডিনামাইট চার্জ করে ব্রিজগুলি ভেঙে দিয়ে যায়; কিন্তু মিত্রবাহিনীর কাছে রেডিমেড ব্রিজ থাকায় তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে ব্রিজ নির্মাণ করে পাকিস্তানীদেরকে তাড়িয়ে নিয়ে যায়। পাকিস্তানীরা কোন প্রতিরোধ তৈরি করতে না পেরে শেষপর্যন্ত যশোর ক্যান্টনম্যান্টে পালিয়ে যায়। এলাঙ্গির যুদ্ধে কয়েকজন ভারতীয় সৈন্যও শহীদ হয়েছিলেন বলে এলাকাবাসী মনে করে থাকেন।
বি এম রেজাউল করিম

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!