You dont have javascript enabled! Please enable it! ইয়াহিয়া খান, আগা মুহাম্মদ (১৯১৭-১৯৮০) - সংগ্রামের নোটবুক

ইয়াহিয়া খান, আগা মুহাম্মদ (১৯১৭-১৯৮০)

বাংলাদেশে গণহত্যার মূল আসামি ইয়াহিয়া খান বা আগা মুহাম্মদ ইয়াহিয়া খানের জন্ম পেশোয়ারে, ১৯১৭ সালে। পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাস করে তিনি সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন এবং ১৯৬৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান তাকে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হিসেবে নিযুক্ত দেন।
১৯৬৯ সালে গ্ণ-আন্দোলনের মুখে আইয়ুব খান পদত্যাগে বাধ্য হলে ইয়াহিয়া খান ক্ষমতা দখল করেন এবং পূর্ববর্তী সামরিক প্রেসিডেন্টের মতো অচিরেই সাধারণ নির্বাচন করবেন বলে ঘোষণা দেন। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর পাকিস্তান প্রথমবারের মতো সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে পাঁচটি প্রদেশে নির্বাচন হয়। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নেতৃত্ব আওয়ামী লীগ কেন্দ্র ও প্রদেশে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। পশ্চিম পাকিস্তানে পাকিস্তান পিপলস পার্টি জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে ৮৮টি সিট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান লাভ করে।
ভুট্টো ও সামরিক বাহিনী শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের পক্ষপাতী ছিল না। এদের বিরোধিতার কারণে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ ইয়াহিয়া জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ব পাকিস্তানে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হয়।
সংকট নিরসনে ১৫ মার্চ ইয়াহিয়া ঢাকায় আসেন। ভুট্টোও আসেন। ১৬ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত তাঁরা আলোচনার ভান করেন এবং পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অবাঙালী সৈনিক এনে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। প্রস্ততি সম্পন্ন হলে ২৫ মার্চ রাতে ভুট্টো ও ইয়াহিয়া ঢাকা ত্যাগ করে এবং ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়।
বাংলাদেশে স্বাধীন হলে ভুট্টোর নীলনকশায় ইয়াহিয়া পদচ্যুত হন এবং ভুট্টো প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৭১ সালের ঘটনাবলি তদন্তে হামুদুর রহমান কমিশন গঠিত হয়। সেখানে ইয়াহিয়াকে দায়ী করা হয়। পাকিস্তানে মদ্যপ ও লম্পট হিসেবে খ্যাত ইয়াহিয়াকে পাকিস্তান ভাঙার জন্য দায়ী করা হয়। আমাদের কাছে ইয়াহিয়া খান হচ্ছে প্রতিশ্রুতি ভন, নিষ্ঠুরা, গণহত্যা ও বর্বরতার প্রতীক।
১৯৮০ সালে তাঁর মৃত্যু হয়।
[৪৩] মুনতাসীর মামুন

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত