ইচাখালির যুদ্ধ-৩, মেহেরপুর
হাবিলদার আব্দুল মালেকের নেতৃত্বে জাহাঙ্গীর, দিরাজ, জিল্লুর, মজিবর, দেলোয়ার, রবজেল, মহর, শাজহান, ফিরতাজসহ ১৫ মুক্তিযোদ্ধা ৩০ জুন ইচাখালি বিওপিতে পাকসৈন্যদের ওপর আক্রমণ চালায়। প্রায় দু’ঘন্টাব্যাপী এ যুদ্ধে ৩ জন পাকসৈন্য আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে কেউ হতাহত হয়নি। এ দিন শিকারপুর থেকে বশির আহমেদ, আসাদুজ্জামান টুনু, একরামুল হক ছোট এবং দেলোয়ার হোসেন গাংনীর সার্বিক অবস্থা বর্ণনা করেন। বিদায় নেয়ার সময় ছোটর মা কান্নায় ভেঙে পড়েন; কিন্তু তার বাবা হাফেজউদ্দীন বিশ্বাস দলনেতা বশির আহমেদের হাতে ছেলেকে তুলে দেন। এই একই দিনে সুবেদার মুকিম এবং হজরত আলীর নেতৃত্ব এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা বেতাই থেকে কাথুলি বিওপির উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে আসে। সঙ্গে আছে জিল্লুর, কাশেম, রফাত, একেন, সদর রূপচাঁদ সারী, জার্মান আলী, রবিন, ফজলু, রবজেল প্রমুখ মুক্তিযোদ্ধা। নদীর এপারে হালসানাপাড়ায় আসতেই ভোর হয়ে যায়। সেখান থেকেই দেখা যায় কাথুলি ক্যাম্পের বাইরে রাজাকারদের দিয়ে বাংকার খোঁড়ানো চলছে এবং আমের আঁটি ছুড়ে ছুড়ে পাকসেনারা নিজেদের মধ্যে গ্রেনেড নিক্ষেপের অনুশীলন করছে। কুতুবপুরে হালসানাপাড়ায় রাস্তার পাশে পজিশন নিয়ে হজরত আলী এলমজির ব্রাশফায়ার দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে সকল মুক্তিযোদ্ধার অস্ত্র একযোগে গর্জে ওঠে। মুক্তিবাহিনীর অতর্কিত এই আক্রমণে ৮ জন পাকসৈন্য খতম হয়। অন্যান্য পাকসৈন্য পাল্টা আক্রমণের আগেই মুক্তিযোদ্ধারা কুতুবপুর থেকে নিরাপদে সরে যেতে সক্ষম হয়।
[১০৩] রফিকুর রশীদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত