You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.11.10 | ইছাপুরা গ্রামে অপারেশন, নারায়ণগঞ্জ - সংগ্রামের নোটবুক

ইছাপুরা গ্রামে অপারেশন

বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫০০/৭০০ মুক্তিযোদ্ধা নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইউনিয়নের ইছাপুরা এলাকার কয়েকটি বাড়িতে অবস্থান করত। গ্রামবাসী ও চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন মুক্তিযোদ্ধাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এখান থেকেই তারা বিভিন্ন অপারেশন অংশ নিতেন। এ খবর গুপ্তচরের মাধ্যমে পাকসেনারা শোনামাত্র নভেম্বর মাসের ১০ তারিখের দিকে হঠাৎ করে বালু নদী দিয়ে গানবোটে চড়ে। ইছাপুরা গ্রামে প্রবেশ করে। কিছু পাকসেনা খিলক্ষেত দিয়ে পায়ে হেঁটে ইছাপুরার দিকে অগ্রসর হয়। দুপুর বেলা শামসুদ্দীন চেয়ারম্যানের বাড়িতে রূপগঞ্জের থানা কমান্ডার আব্দুর জাব্বার খান পিনুর গ্রুপ, সামাদের গ্রুপ, মো. আল আমিন দুলাল, মহিকুর, আনোয়ার, মামুন, সোনা মিয়া, আমানউল্লাহ আমান, ঢাকার মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়ার গ্রুপ, দেলোয়ারের গ্রুপ, মোস্তফা কামালের গ্রুপ, ৮/১০টা গ্রুপ সম্মিলিতভাবে পরিকল্পনা মাফিক একটা বড় ধরনের অপারেশনে যাবার প্রস্তুতির জন্য আলাপ – আলোচনায় বসবে এমন সময় হঠাৎ ডেমরার আজিজের গ্রুপের মুক্তিযোদ্ধারা যারা দিনে নদীর পাড়ে ডিউটিরত ছিলেন তারা দেখতে পান পাঞ্জাবিরা নদী পথে গানবোটে চড়ে ইছাপুরা গ্রামের দিকে ছুটে আসছে। সাথে সাতেহ অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে সংবাদ পৌঁছে দেন। শোনামাত্র মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে জন্য ধান ক্ষেতে পজিশন নেন। পাকসেনার বাজারে সেলিং করে। তাঁদের কভার দেয় পদাতিক বাহিনী। পাকসেনারা মুক্তিযোদ্ধাদের হেড কোয়ার্টার রূপগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শামসুদ্দীনের কঠোর দোতলা বাড়িটি (ইছাপুরা বাজার) পুড়িয়ে দেয়। এরপরই বালু নদীর পশ্চিম পাড় থেকে ফায়ার শুরু করে। পাক সেনাদের প্রতিহত করার জন্যে কিছু মুক্তিযোদ্ধা পূর্ব পাড়ে পজিশন নিয়ে ফায়ার করেন। সেলের আঘাতে কিছু লোকজন শহীদ হন। ডেমরার আজিজের গ্রুপের একজন মুক্তিযোদ্ধার পিঠে গুলি লাগে। মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বে পাকসেনারা বালু নদীর পূর্ব পাড়ে আসতে পারে না। মুক্তিযোদ্ধাদের গোলাবারুদ, অস্ত্র সীমিত থাকায় পিছু হটতে বাধ্য হয়। পাকসেনারাও সন্ধ্যা হয়ে আসাতে আর যুদ্ধ না চালিয়ে গানবোটে চড়ে ঢাকায় ফিরে যায়।
[১১০] রীতা ভৌমিক

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত