You dont have javascript enabled! Please enable it!

ইন্দেরহাট যুদ্ধ, স্বরূপকাঠি

বরিশালের স্বরূপকাঠি ও নাজিরপুরের কমান্ডার ছিলে জাহাঙ্গীর বাহাদুর। সোহাগদলে তার জন্ম। পিতা নূর মোহাম্মদ। ঢাকা নটরডেম কলেজ হতে বি.এ. পাস করেন। তার বড় ভাই আলমগীর বাহাদুরকে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং শুরু করেন। আলমগীরের ১২ মে ধরা পড়ে এবং পিরোজপুরে পাকবাহিনী তাকে হত্যা করে। তার ছোট ভাই জাহিরুল ইসলাম ২৭ মার্চ ঢাকায় নিহত হন। তাই ভ্রাতৃহত্যার প্রতিশোধ ও স্বাধীনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি একাধারে সাহিত্যিক ছিলেন। তার এবং এনামুল হকের সম্পাদনায় নাজিরপুর থানার মনোহরপুর হতে ‘আমার বাংলা’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। ১ আগস্ট প্রথম সংখ্যা বের হয়ে এবং ২১ সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। মুক্ত অঞ্চলে ‘ আমার বাংলাদেশ’ পত্রিকা ছিল প্রথম সারির। ডা. মুজাহার উদ্দীন এম.পি.-এর শাহ প্রিন্টিং প্রেস হতে পত্রিকা প্রকাশিত হয়। যুদ্ধাকালে প্রেস নাজিরপুর নিয়ে আসা হয়। ১৪ আগস্ট জাহাঙ্গীর বাহাদুর ও সাকুবর ইন্দেরহাট আক্রমণ করে এবং শর্ষিণা মাদ্রাসার ছাত্র নিয়ে গঠিত বদর বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে যায়। ১৪ আগস্ট জাহাঙ্গীর বাহাদুর ইন্দেরহাট দখল করে মাইকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বাজিয়ে শোনান। পুনরায় ১৭ অক্টোবর কমান্ডার জাহাঙ্গীর ইন্দেরহাট আক্রমণ এবং ১৭ জন পাকসেনা খতম করে। জাহাঙ্গীর বাহাদুর স্বরূপকাঠি ও নাজিরপুর থানা আক্রমণ করে অস্ত্র দখল করেন। তার রাজনৈতিক পরামর্শদাতা ছিলেন আওয়ামী লীগের ফজজুল হক, এবিএম সিদ্দিক প্রমুখ। স্বাধীনতার পর একদল কুচক্রী ১৯৭২ সনের ২৭ মার্চ বীরযোদ্ধা জাহাঙ্গীর বাহাদুরকে হত্যা করে। তার মৃত্যুর খবর শুনে স্ত্রী মারা যায়। তার এক ভাই আবদুল খালেককেও তারা হত্যা করে। এক পরিবারে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধা হারিয়ে আজ তারা অসহায়।
[৫৭] সিরাজ উদ্দীন আহমেদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!