ইমামনগর ঘুণ্টিঘর যুদ্ধ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ
১৯৭১ এর খ্রিষ্টাব্দের ৮ অক্টোবর, শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় ইমামনগর ঘুন্টিঘর যুদ্ধে পাকবাহিনীর রকেট লাঞ্চরের গোলার আঘাতে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমশের শাহাদাৎ বরণ করেন। এই দিন মুক্তিবাহিনী রেললাইন ব্রীজ ইমামনগর ঘুন্টিঘর এলাকায় ডিফেন্স নিয়ে অবস্থান করছিল। কমান্ডার তুরফানের নেতৃত্বে এই লড়াকু টহল দলে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৯ জন। অপরদিকে হানাদার বাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থান থেকে প্রায় ৭/৮ শ’ গজ দূরে শাব্রীজের এলাকায় ডিফেন্স নিয়ে অবস্থান গ্রহণ করে। এই দিন দলদলী. কোম্পানি কমান্ডার লে. রফিকুল ইসলাম যুদ্ধক্ষেত্র পরিদর্শনে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সতর্ক করেন যে, আজ শুক্রবার হানাদার বাহিনীর আক্রমণ হতে পারেঃ ডিফেন্স শক্ত করে রাখবেন। হানাদার বাহিনী প্রায় শুক্রবার হামলার সুযোগ নিত। লে. রফিকুল ইসলাম মুক্তিযোদ্ধাদের দিক-নির্দেশনা দিয়ে তেলিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্যাম্পে ফিরে আসেন। বেলা ১২টার দিকে পাকবাহিনী টুকটাক রকেট লাঞ্চার নিক্ষেপ শুরু করে। এরপর উভয় পক্ষে গোলাগুলি শুরু হয়। পাকবাহিনী ছোঁড়া একটি রকেট লাঞ্চার আলীঙ্গর গ্রামে গিয়ে পড়ে। ওই সময়ে সমশের ও তাঁর শালা আঃ সাত্তার এবং বাহাদুরগঞ্জের মতি টু-ইঞ্চ-মর্টার নিয়ে পজিশন বদল করার সময় হানাদার বাহিনীর ছোঁড়া রকেট-লাঞ্চার গোলার আঘাতে বাঁশ ঝাড়ের পাকা ইন্দারার পাশে সমশেরের একটি পা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধা মতি সমশেরের দেহ ঘাড়ে করে তেলীপাড়া ক্যাম্পে আনার পথে সমশের মৃত্যুবরণ করেন। প্রায় ১ ঘন্টা যুদ্ধ চলার পর উভয় পক্ষের গোলাগুলি বন্ধ হয়।
[৫৭৪] রিয়াজ আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত