আসলাম নিয়াজি, ব্রিগেডিয়ার (১৫ ও ৩৯ বেলুচ)
আশরাফ সৈয়দ, লে. কর্নেল (২৩ পাঞ্জাব)
ফারুকী, ক্যাপ্টেন (সহকারী অধিনায়ক, ১ নং উইং)
বশির, মেজর
৫৩, ব্রিগেড
স্থানঃ চাঁদপুর, ফেনী, অপরাধঃ আসলাম নিয়াজির নির্দেস’৭১-এর শেষ দিকে লাকসাম অঞ্চলের সকল হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। পাকবাহিনী ফেনীতে প্রবেশ করে দেওয়ানগঞ্জ, আমতলী ও শহরতলির বিভিন্ন স্থানে কয়েকশ’ লোককে হত্যা করে। তারা দেওয়ানগঞ্জ ট্রাংক রোডের পাশে একটি জবাইখানা তৈরি করে। প্রতিদিন সেখানে বহু লোককে এন জবাই করে হত্যা করে। একই সময়ে তারা মার্চেন্ট সমিতির কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তারসহ ৮ জনকে মুক্তিযোদ্ধা সন্দেহে হত্যা করে। স্টেশনের অদূরে এক বাঙালী ভদ্রলোক বাড়িতে তিনজন যুবতী মেয়ে আশ্রয় নিলে হানাদাররা ঐ পরিবারের সকলকে হত্যা করে মেয়ে তিনটিকে ধরে নিয়ে যায়। তাঁদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। ধুলগ্রাম এলাকায় আক্রমণ চালিয়ে তিন শতাধিক লোককে হত্যা করে। সেই সাথে গ্রামটি জ্বালিয়ে ভস্মীভূত করে।
ব্রিগেডিয়ার আসলাম, লে. কর্নেল আশরাফ ও ক্যাপ্টে ফারুকী চাঁদপুর, লাকসাম মুজাফফরগঞ্জ, হাজিগঞ্জ, ফেনী ও বেলোনিয়ার নিকট সংঘটিত সকল হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের নেতৃত্ব দেয়।
বৃহত্তর ফেনী এলাকার সহজ হত্যাযজ্ঞ ও অন্যান্য অপরাধের সঙ্গে মেজর বশির জড়িত ছিল। জানা যায়, ক্যাপ্টেন আজমতই একমাত্র অফিসার যে ইতিপূর্বে মানুষ হত্যা করেনি। এ কারণে একদিন মেজর বশির ক্যাপ্টেন আজমতকে বিদ্রূপ করেছিল। বশির এক রাতে আজমতকে ডেকে বলেন, ‘আগামীকাল থেকে তুমি মানুষ হত্যা করা শুরু করবে। এটা খুব সহজ কাজ। ‘শুদুহ তাই নয় বিষটি হাতে কলমে বোঝানোর জন্য দা-এর মত লম্বা একটা অস্ত্র হাতে নিয়ে কীভাবে আঘাত করতে হয় তা দেখাতে শুরু করে। হেড কোয়ার্টারে থাকাকালীন সে সামরিক ডিউটির পাশপাশি কিভাবে মানুষ হত্যা করতে হয় সে বিষয়ে অন্যদের প্রশিক্ষিত করত।
লে. কর্নেল আশফাক সৈয়দ, ব্রিগেডিয়ার আসলাম নিয়াজি, ক্যাপ্টেন ফারুকী ও তাদের সহযোগীদেরকে ফেনীতে সংঘটিত সকল প্রকার হত্যা, ধ্বংসযজ্ঞ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা. এম. এ. হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত