আনোয়ারা থানার পশ্চিম দিকের রাজাকার ক্যাম্প অভিযান, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানার পশ্চিম দিকের কতিপয় এলাকা হলোঃ কর্ণফুলী নদীর পূর্ব এলাকা, রায়পাড়া, মেরিন একাডেমী এলাকা ও কর্ণফুলী নদীর উপকূলীয় এলাকা (যা আনোয়ারা থানার পশ্চিম দিক সংলগ্ন)। অভিযান সময় ছিল কার্তিক মাসের শেষের দিক। নেতৃত্ব দেন সার্জেন মহিউল আলম ও তৈলার দ্বীপের সকল মুক্তিযোদ্ধাগণ। মূলত এ অপারেশন করা হয় বন্দরে আগত দেশি-বিদেশী জাহাজে। এই সব রাজাকার ও পাকবাহিনীর অবস্থানের কারণে অভিযান পরিচালনা কঠিন ছিল। তাই তাদেরকে কর্ণফুলীর উপকূল থেকে বিতাড়িত করার প্রয়োজন ছিল। ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে রাত ১০টার দিকে তৈলার দ্বীপ হতে রারসত গ্রামে রওয়ানা দেন। সকল মুক্তিযোদ্ধাকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়। হাবিলদার মদন আলীর গ্রুপ, জৈদ্দার হাটে, কমান্ডার মধুসূদন নাথের গ্রপ গনি চৌধুরীর বাড়িতে ও মহিউল আলমের নেতৃত্ব জালাল চৌধুরীর বাড়িতে অপারেশন করবে। ১ম গ্রুপ জৈদ্দারহাটে পৌঁছে রাজাকারদের কাউকে পায়নি কারণ ঐ দিন মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। মুক্তিযোদ্ধারা পরে সুরমা পুকুরের পাড় অন্য গ্রুপের সাথে মিলিত হতে চলে যান। হঠাৎ মুক্তিযোদ্ধারা রুস্তম আলী দেখেন যে কয়েকজন লোক আসছে। তারা আসলে রাজার ছিল, তারা এসেই রুস্তম আলীকে গুলি করে হত্যা করে, রাইফেলও ছিনিয়ে নেয়। এরপর উভয় পক্ষে গোলাগুলি হয়। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা তৈলার দ্বীপ চলে যান। অন্যদিকে গণি চৌধুরীর বাড়িতে ভোড় ৫টায় মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করে, কেউ বের না হলে ফায়ার বন্ধ করা হয়। কিছুক্ষণ পর রাজাকাররা বের হয়ে এলে হলে ফায়ার করে রাজাকার হত্যা হয়। অন্যরা অস্ত্র ফেলে পালিয়ে যায়। অন্য দিকে সার্জেন্ট মাহিউল আলমের গ্রপটি জালাল চৌধুরীর বাড়ি আক্রমণ করলে তখন কাউকে সেখানে পাওয়া যায়নি ফলে, তিনি ও তৈলার দ্বীপে চলে আন। এভাবেই এই অভিযান শেষ হয়।
[৫৯৭] কে.এম.আহসান কবীর
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত