আজমত ক্যাপ্টেন
স্থানঃ ঝালকাঠি অপরাধঃ ক্যাপ্টেন আজমত খানের নেতৃত্বে পাকবাহিনী ঝালকাঠি, নলছিটি, কাঁঠালিয়া ও রাজাপুরের বিভিন্ন অঞ্চলের নিরীহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন, আওয়ামী লীগ কর্মী ও সমর্থক বাঙালীদের ধরে এনে হত্যা করে। ২৫ এপ্রিল থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত এখানে প্রায় ১৫ হাজার নিরীহ বাঙালীকে হত্যা করে। মুক্তিযোদ্ধা সজীব বোসের বোন রমাবতী ছিলেন কলেজের ছাত্রী। ক্যাপ্টেন আজমত তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। পরে তার লাশ নদীর তীরে পাওয়া যায়। হিসানন্দকাঠির শেফালী রানী ক্যাপ্টেনের পাশবিক লালসার শিকার হতে বাধা দিলে তাঁর ছেলেকে তাঁর সামনেই আছড়ে হত্যা করে। তবুও তিনি রাজি না হওয়ায় বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে তাঁকে হত্যা করে। ২৩৬ নে রামানাথপুরে নামাজ আদায়রত ১৭ জন মুসল্লিকে ধরে নিয়ে পুকুর পাড়ে বসিয়ে এরা গুলি করে হত্যা করে। ১ জুন নলছিটি থেকে বহু যুবতী মেয়েকে ধরে নিয়ে যায়। এখানে ১১ জন কিশোরীকেও এই আরমিরা হত্যা করে। বিভিন্ন স্থান থেকে ধরে আনা যুবতী ও তরূণীদের সিও অফিসের বন্দিশালায় বিবস্ত্র অবস্থায় আটকে রাখত। পাশবিক নির্যাতনে অচেতন হয়ে পড়লে তাঁদেরকে পাঠিয়ে দিত বধ্যভূমিতে। সুতাবাড়িয়া গ্রামের কালিপ্রসন্ন সমাদ্দারের স্ত্রী পারুল বালার হত্যার দৃশ্য দেখা পর তাঁদের সন্তান চন্দ্র সমাদ্দার আজও মানসিকভাবে অসুস্ত্র। ক্যাপ্টেন আজমত ও তাঁর সহযোগী সৈন্যরা এই সকল অপরাধের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল।
ক্যাপ্টেন আজমত ও তাঁর সহযোগীদেরকে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা যায়।
[১৪] ডা. এম. এ. হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ ষষ্ঠ খণ্ড- মুনতাসির মামুন সম্পাদিত