ঝাউডাঙা গণহত্যা (২১ মে ১৯৭১)
ঝাউডাঙা হলো সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া থানার অন্তর্গত বাংলাদেশের দক্ষিণ- পশ্চিম সীমান্তবর্তী একটি বাণিজ্য কেন্দ্র। গণহত্যার স্থানটি সাতক্ষীরা জেলায় অবস্থিত হলেও এখানে গণহত্যার শিকার হয়েছিলেন খুলনা জেলার অধিবাসীরা।
চুকনগর গণহত্যার পর সেখান থেকে পালিয়ে এসে যারা ভারত অভিমুখে যাচ্ছিল, সেই সব পলায়নপর মানুষের ওপর ঝাউডাঙায় দ্বিতীয় দফায় গণহত্যা ঘটে। ২০ মে চুকনগর গণহত্যার পর বেঁচে যাওয়া লোকজন সারাদিন পায়ে হেঁটে ঝাউডাঙায় পৌঁছেছিল। সেখানে তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বাড়ির পাশে অবস্থিত খেজুর বাগানে রাত্রিযাপন করে। পরদিন (২১ মে ১৯৭১) সকালে দুই জিপ ভর্তি খানসেনা এবং তাদের কিছু সহযোগী ঝাউডাঙা ব্রিজের ওপর নেমেই এইসব মানুষের উপর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ শুরু করে। আকস্মিক এই আক্রমণে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে অসংখ্য মানুষ। মারা যাওয়া অধিকাংশ মানুষ ডুমুরিয়া, দাকোপ, বটিয়াঘাটা, কেশবপুর (যশোর) ও তালা (সাতক্ষীরা) থানার বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়। এখানে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যা সম্পর্কে প্রকৃত তথ্য জানা যায়নি। তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে এখানে অন্তত শ’খানেক লোক নিহত এবং প্রায় সমান সংখ্যক মানুষ আহত হয়েছিল।১৮০
……………………………………………………
১৮০. সাক্ষাৎকার, অমর বৈরাগী (বলাবুনিয়া, বটিয়াঘাটা), ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। সাক্ষাৎকার, জীতেন্দ্রনাথ মণ্ডল (বসুরাবাদ, বটিয়াঘাটা), ৭ মার্চ ২০১৪। এছাড়া বটিয়াঘাটায় ফিল্ড সার্ভে করার সময়ে বর্তমান লেখক ঝাউডাঙায় মারা যাওয়া বেশ কয়েক জনের নাম ও পরিচয় জানতে পারেন।
……………………………………………………
সূত্র: একাত্তরে খুলনা মানবিক বিপর্যয়ের ইতিহাস- দিব্যদ্যুতি সরকার