You dont have javascript enabled! Please enable it!

ফুলবাড়ি রেলগেট গণহত্যা (এপ্রিলের শেষার্ধ)

ফুলবাড়ি রেলগেট যশোর-খুলনা মহাসড়ক সংলগ্ন একটি বর্ধিষ্ণু বাজার। বর্তমানে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই এলাকায় অবস্থিত। খুলনার দিঘলিয়া থানার দিঘলিয়া গ্রাম থেকে আসা শরণার্থীদের একটি দল এখানে গণহত্যার শিকার হয়।
এপ্রিল মাসের শেষার্ধে দিঘলিয়া গ্রামের কিছু অধিবাসী শরণার্থী হয়ে ভারতে যাচ্ছিলেন। পথে ফুলবাড়ি বাজার অতিক্রম করার সময়ে তারা স্থানীয় কিছু বিহারির হাতে আটক হন। বিহারিরা তাঁদের ধরে নিয়ে খালেক নামক স্থানীয় একজন ব্যবসায়ীর গোডাউনে আটকে রাখে। এই আটককৃত শরণার্থীদের মধ্যে কিছু মহিলাও ছিল। তাদের উপর বিহারিরা শারীরিক নির্যাতন করে। পরে আটককৃতদের মধ্য থেকে তেরো জন পুরুষকে রেখে মহিলাদের ছেড়ে দেয়া হয়। এই তেরো জনকে ঐ গোডাউনে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল।
তিন দিন পরে পাকিস্তানি সেনাদের খবর দিয়ে এনে এই বন্দীদের তাদের কাছে তুলে দেওয়া হয়। পাকিস্তানি সেনারা একটি গাড়িতে তাদের তুলে নিয়ে পার্শ্ববর্তী একটি ইটের ভাটার কাছে নিয়ে যায়। সেখানে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে সবাইকে বসে পড়ার জন্য নির্দেশ দেয়। অসহায় এই বন্দীরা নীরবে পাকিস্তানি সেনাদের এই আদেশ পালন করে। এমন সময় আচমকা কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা তাঁদের উপর ব্রাশ ফায়ার করতে শুরু করে। গুলিতে বন্দীদের মৃত্যু নিশ্চিত হলে লাশগুলো সেখানে ফেলে রেখে তারা চলে যায়। এই গণহত্যায় দিঘলিয়া গ্রামের কালীপদ, গঙ্গারাম, দাশরথী, দয়াল প্রমুখ তেরো জন প্রাণ হারান।৭২
……………………………………………………
৭২. কে এম হালিম (দিঘলিয়া, খুলনা)-এর জবানবন্দী। অন্তর্গত, রাশেদুর রহমান (সম্পা.), খুলনা ১৯৭১: অংশগ্রহণকারী ও প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান (ঢাকা: প্রথমা, ২০১৩), পৃ. ৬৩।
……………………………………………………

সূত্র: একাত্তরে খুলনা মানবিক বিপর্যয়ের ইতিহাস- দিব্যদ্যুতি সরকার

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!