প্রথম ভাষা আন্দোলন জাদুঘর স্থাপন ও একুশে পরিষদ গঠন
একুশের স্মৃতিসংরক্ষণ এবং সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্রদের উদ্যোগে ১৯৭৬ সালে প্রথম প্রতিষ্ঠিত হয় “ভাষা আন্দোলন জাদুঘর’ এবং ‘একুশে পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন।
ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক ছিলেন এই জাদুঘর ও পরিষদের সভাপতি অন্যান্যরা ছিলেন ডা. সাঈদ হায়দার (সহ-সভাপতি), ডা. আলী আজগর কোষাধ্যক্ষ), ডা. আবদুস সালাম (সাধারন সম্পাদক), ডা. ফজলুল করিম শাহ প্রধান (সদস্য), ডা. ফজলে রাব্বি (সদস্য), ডা. মওসুফ আলী চৌধুরী (সদস্য)।
এ প্রসঙ্গে আহমদ রফিক বলেন, “যতদূর মনে পড়ে ভাষা আন্দোলনের স্মৃতিরক্ষা এবং এর ঐতিহাসিক তথ্যাদি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নিয়ে সত্তরের দশকের একেবারে শেষদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ভাষাসংগ্রামী কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে ‘একুশে পরিষদ’ গঠন করি। সংগঠনের সভাপতি আমি আহমদ রফিক, সহ-সভাপতি ডা. সাঈদ হায়দার, সেক্রেটারি ডা. অধ্যাপক আবদুস সালাম, কোষাধ্যক্ষ ডা. আলী আসগর এবং সদস্য ডা. ফজলে রাব্বি (কুষ্টিয়ার), ডা. ফজলুল করিম শাহ প্রধান, ডা. মওসুফ আলী প্রমুখ কয়েকজন।
সংগঠনের নিয়মিত বৈঠক চলেছে ডা. সালামের কলেজ হোস্টেল সংলগ্ন বাসায়। সংগঠনের উদ্যোগে একুশে-ভিত্তিক সাইক্লোষ্টাইল প্রশ্নমালার জবাবের ভিত্তিতে মেডিকেল কলেজের ভাষাসংগ্রামী ছাত্রদের কর্মকান্ডের ভূমিকা নিয়ে একটি ইতিহাস রচনাও ছিল সংগঠনের অন্যতম উদ্দেশ্য। এ কাজ বেশী দূর এগোইনি।
সংগঠনটির একটি স্থায়ী রূপ দিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগের এক পাশে ছোট একফালি জায়গায় একটি ভাষা-মিউজিয়াম স্থাপন করা হয় তৎকালীন কলেজ অধ্যক্ষ ও দুই চারজন অধ্যাপকের উপস্থিতিতে। সেখানে রাখা হয় ভাষা অন্দোলন বিষয়ক বই এবং কিছু দলিলপত্র। কিন্তু স্থানীয় চিকিৎসক ও ছাত্রদের আগ্রহের অভাবে কয়েকবছরেই রক্ষিত বই দলিপত্র পোকায় কাটে, মৃত্যু হয় প্রথম ভাষা জাদুঘরটির। এক্ষেত্রে কর্মীর অভাব ছিল বড় সমস্যা। কারণ চিকিৎসকগণ সদাব্যস্ত, তেমনি ছাত্ররাও। তাদের শিক্ষায়তনের সংগ্রামী ঐতিহ্য রক্ষার তাদের বড় একটা আগ্রহ দেখা যায়নি।”
সাক্ষাতকার গ্রহণ- এম আর মাহবুব, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
সূত্র: ঢাকা মেডিকেল কলেজ: সেবা সংগ্রাম ঐতিহ্য – অধ্যাপক ডাঃ মনিলাল আইচ লিটু, এম আর মাহবুব