পারকুমিরা গণহত্যা, সাতক্ষীরা
সাতক্ষীরা জলার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা বাজারের এক কিলোমিটার উত্তরে পারকুমিরা দাতব্য চিকিৎসালয়। ১৯৭১ সালের ২৩ এপ্রিল এখানে সংঘটিত হয় নির্মম হত্যাযজ্ঞ। ২২ এপ্রিল রাতে পাটকেলঘাটা বাজারের প্রবেশপথে (অধুনা চৌরাস্তা) অবস্থিত মহসিন মিয়ার দোকানে (পূর্বতন ইউনাইটেড ব্যাংক লিমিটেড বিল্ডিংয়ে বসে এলাকার কিছুসংখ্যক পাকিস্তানপ্রেমী বিভিন্ন ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই পরিকল্পনার সাথে যুক্ত ছিল জনৈক পাঞ্জাবী রুটি বিক্রেতা। ২৩ এপ্রিল শুক্রবার স্থানীয় সহযোগীদের সহযোগিতায় খানসেনারা পারকুমিলা ও পুটিয়াখালী গ্রামে প্রবেশ করে। মজিদ থেকে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। ঠিক সেই সময়ে শুরু হয় নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ও হোম।
কাশিপুর গ্রামের হায়দার বিশ্বাস ছিলেন তৎকালীন মুসলিম লীগের একজন কর্মী, তাকে নির্দেশ দেওয়া হলো পারকুমিরা গ্রামের হিন্দু অধিবাসীদের বাড়িতে আগুন দিতে। হায়দার বিশ্বাস ঘরে আগুন দিতে অস্বীকার করলে তার শরীরে পাট জড়িয়ে কেরোসিন ঢেলে তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
এছাড়া পারকুমিরা দাতব্য হাসপাতালের সামনে ৪৯ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। স্মর্তব্য যে, ফুলতলা, ও নওয়াপাড়া থেকে তাড়া খেয়ে কিছু সংখ্যক হিন্দু ভারতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পারকুমিরায় আসে।
এছাড়া খুলনার ফুলতলা ও নওয়াপাড়ার নাম না জানা আরো অনেককে একসাথে বেঁধে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করা হয়।
[৬৪২] বদরু মাহাম্মদ খালেকুজ্জামান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত