বনগ্রাম গণহত্যা ও গণকবর, টাঙ্গাইল
টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার গয়হাটা ইউনিয়নের যমুনা নদীর তীরবর্তী প্রত্যন্ত অজপাড়া গাঁ বনগ্রাম। এ গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প থাকার তথ্য পাক সেনাবাহিনীর কাছে পৌঁছালে একাত্তরের ১০ অক্টোবর যমুনা নদীর উল্টোপাড়ের পাবনা জেলা থেকে একটি লঞ্চে করে ছয়-সাত জন পাকসেনা নাগরপুর আসে। ফলে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের প্রতিরোধে আক্রমণ করে, এতে একজন পাক সেনা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় এবং বাকিরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনার প্রতিশোধ নিতে ২৫ অক্টোবর এক বিশাল বহর নিয়ে পাক সেনারা নাগরপুরের বনগ্রামে আসে। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সজ্জিত পাক সেনাবাহিনী প্রতিরোধ যুদ্ধে লিপ্ত মুক্তিসেনাদের ছোট্ট দলের পাঁচ-ছয় জন মুক্তিযোদ্ধাকে গুলিবিদ্ধ করে বনগ্রামে প্রবেশ করে একে একে হত্যা করে আরো অনেককে। এই হত্যাযজ্ঞ মুক্তিযোদ্ধাসহ বনগ্রামের ৫৭ জন এবং পাশের বন্যাপাড়া গ্রামের ৩৩ জনসহ মোট ৯০ জনকে তারা সেদিন নির্মমভাবে হত্যা করে। রমজান মাসের চতুর্থ দিন থাকায় সেদিন যারা নিহত হন তাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন রোজাদার। শুধুমাত্র হত্যার মধ্যেই তাদের নির্মমতা সীমাবদ্ধ ছিল না। হানাদার বাহিনী গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। একটি ক্ষেতে তাদেরকে গণকবর দেয়া দেয়।
[৬১৫] হাসিনা আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত