হেলিপোর্ট ও ফরেস্ট ঘাট বধ্যভূমি, খুলনা
খুলনা শহরের হেলিপোর্ট ও ফরেস্ট ঘাট ছিল অপর দুই বধ্যভূমি। হেলিপোর্টটি ছিল সার্কিট হাউসসংলগ্ন জজকোর্টের সামনে। পাকিস্তানিরা নিরপরাধ নিরস্ত্র বাঙালিদের ধরে এনে প্রকাশ্য দিবালোকে এই স্থানটিতেই হত্যা করত। তৎকালীন জেলা জজ দিনের পর দিন এই নির্যাতন-নির্মমতা-হত্যা দেখতে দেখতে অসহ্য যন্ত্রণায় একদিন তিনি নিজেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন। তার চোখের সামনেই হত্যা করা হয়েছিল দশজন মানুষকে-নিরপরাধ মানুষ।
রাতের বেলায় জজকোটের পেছনে ফরেস্ট ঘাটে বাঙালিদের এনে জবাই করে হত্যা করা হতো এবং দেহগুলোর পেট চিরে নদীতে ফেলে দেয়া হতো। এই ঘাটটি আবার জজ সাহেবের বাসার ঠিক পেছনেই। রাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে সেইসব মৃত্যুপথযাত্রী বাঙালি করুণ আর্তনাদ জজ সাহেবের কানে পৌঁছাত। ঘুম হতো না তাঁর। এ সময়ে প্রতি রাতে গড়ে অন্তত ২০ জনকে এখানে জবাই করা হতো বলে মনে করা হয়। নদীতে যেভাবে মৃতদেহ ভাসত তাতে তাই প্ৰমাণ করে। তবে পেট চিরে দেয়ার জন্য অনেকগুলো আবার নদীর অতলে তলিয়ে যেত।
[১৩৭] সুকুমার বিশ্বাস
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত