হোমনা বধ্যভূমি, কুমিল্লা
কুমিল্লা হোমনা-শ্রীমতি সড়কে পুরাতন ডাকবাংলো পার হয়ে একটু পশ্চিমে এগিয়ে গেলে চোখে পড়ত একটি পুকুর। এটি ছিল গনেশ নাথের। এই পুকুর পাড়েই অগণিত বাঙালিকে দলবদ্ধভাবে হাত ও চোখ বেঁধে জীবিত-অধমৃত-মৃত অবস্থায় মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। এ বধ্যভূমি ভরাট করে এখন নির্মাণ করা হয়েছে কলেজ।
এই বধ্যভূমিতে কালমিনা, ঘাগুটিয়া, আলীপুর, দড়িচর থেকে জাহেদ আলম, মুখলেসুর রহমান, সিরাজ ভূইয়া, আলেক মিয়াসহ ১০ জনকে জুলাই মাসের শেষ দিকে, চম্পকনগর ও রঘুনাথপুরের কাছ থেকে ১০-১৫ জনকে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে ধরে এনে হত্যা করে পুকুর পাড়েই মাটিচাপা দেয়া হয় সেপ্টেম্বরের গোড়ার দিকে বাঞ্ছারামপুরগামী একটি ফেরি লঞ্চ থেকে ২৫-৩০ জন পুরুষ, মহিলা ও শিশুকে ধরে হোমনা থানায় আনা হয়। মধ্যরাতে মেয়েদের রেখে বাকি পুরুষ ও শিশুদের হত্যা করে এই পুকুরের পাড়েই মাটিচাপা দেয়া হয়। বর্বর নরপশুরা পরে মহিলাদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায় এবং একইভাবে পুকুর পাড়ে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়। এছাড়াও তিতাস নদী ও শাখা প্রশাখাসমূহের পানি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কাইয়ুম, মনিরসহ অনেকের তাজা রক্তে আজ যেন লাল হয়ে আছে। মেঘনা-তিতাস নদীর মোহনা কালিকাপুরের চরেও রয়েছে অসংখ্য বধ্যভূমি।
[১৮] আবুল কাশেম হৃদয়
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত