কালীগঞ্জ বধ্যভূমি, নান্দাইল, ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার মুণ্ডলী ইউনিয়ন এলাকায় ময়মনসিংহ ভৈরব রেলপথে নরসুন্দা নদীর ওপর কালীগঞ্জ ব্রিজটি আজ ইতিহাসের এক সাক্ষী। যুদ্ধাকালীন সময়ে পাকিস্তানি সেনা বাহিনী স্বাধীনতাকামী নিরীহ লোকজনকে ধরে এনে এ ব্রিজের কাছে হত্যা করতো। শতশত লোককে যে এখানে হত্যা করা হয়েছে তার সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই। এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যাতায়াতে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে স্থানীয় জনগণ মুক্তিযোদ্ধা হায়দারের নেতৃত্বে এ ব্রিজটি ভেঙ্গে ফেলে। ফলে পাক বাহিনী এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আশেপাশের বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ছিল। ব্রিজটি ভাঙ্গা থাকায় ট্রেন এসে দু’পাশে থামলে পাক সেনারা ট্রেন থেকে লোকদের আটক করে মানুষ হত্যা করতো। তাছাড়াও পাক সেনা ও তাদের দোসর রাজাকার, আলবদররা দূর দূরান্ত থেকে লোকজনকে ধরে ট্রেনে করে এনে ব্রিজের পাশে তৈরি করা বাংকার নিয়ে নির্যাতন শেষে হাত, পা বেঁধে ঐ ব্রিজের ওপর দাঁড় করিয়ে গুলি করে লাশ নদীতে ফেলে দিত। তারা মাঝে মাঝে একই রশিতে অনেককে একত্রে বেঁধে গুলি চালাতো। প্রায় প্রতিরাতেই চালাতো এ ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড।
{613} হাসিনা আহমেদ
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত