You dont have javascript enabled! Please enable it!

হাতিয়া গণহত্যা ও বধ্যভূমি, কুড়িগ্রাম

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়ে হত্যা করেছিল নিরীহ নিরপরাধ ৬৬২ জন মানুষকে। পাকবাহিনীর নিষ্ঠুর বর্বরতা ও অত্যাচারের ঘটনা স্মরণ করে এলাকার মানুষ আজ শিহরিত হয়ে ওঠে। অনেকে সেদিনের নিষ্ঠুরতার কাহিনী স্মরণ করে কেউ পাগল, কেউবা আজও নির্বাক।
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানার হাতিয়া ইউনিয়নটি একাত্তরের যুদ্ধকালে হানাদার মুক্ত ছিল। প্রতিটি বাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয়, খাবার, অর্থ ও শত্রুপক্ষের খবর দিয়ে সহযোগিতা করত বলে প্রতিটি মানুষ ছিল এক একজন মুক্তিযোদ্ধা। দেশের স্বাধীনতার জন্য হাতিয়ার মানুষ বিনা অস্ত্রে যুদ্ধ করেছে। হাতিয়ার মানুষ আজও সেই দিনের বর্বর হত্যাযজ্ঞের কথা ভুলতে পারেনি। চারদিকে নিস্তব্ধ। রোজাদার মানুষ সেহেরি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে। ঠিক তখনি চারদিক থেকে শুরু হয় বৃষ্টির মতো গুলি আর মর্টার সেলের গোলা। অনন্তপুর, রামখানা, নয়াডারা, বাবুয়া, নীলকণ্ঠ, দাগারকুটিসহ ৭ গ্রামে চিরুনি অপারেশন করে ৬৬২ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে দাগারকুটি গ্রামে খালের পাড়ে জড়ো করে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়। আবার কাউকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। মায়ের কোল থেকে শিশুদের ছিনিয়ে আছড়ে মারার মতো বর্বর ঘটনাও ঘটেছে ঐ সময়। আগুনে পুড়িয়ে বাড়িঘর ছারখার করে দেয়া হয়। সেই লোমহর্ষক বর্বর হত্যাকাণ্ডে নীরব সাক্ষী দাগারকুটি বধ্যভূমি। হানাদার পাকবাহিনী হাতিয়ার পল্লীতে এই বর্বর গণহত্যা চালিয়ে তিন ঘণ্টার অপারেশনে গ্রামের নিরপরাধ ৬৬২ জন মানুষকে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে।
[৫৮৬] সংকলন

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!