You dont have javascript enabled! Please enable it!

হরিপুর গণহত্যা ও নির্যাতন কেন্দ্র, ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও জেলার সর্বপশ্চিমের থানা হরিপুর। অধিকাংশ এলাকাই ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁষা। এখানে খানসেনা ও তাদের দোসর দালালদের প্রথম আগমন ঘটে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে। প্রত্যন্ত সীমান্ত এলাকায় অবস্থিত বিধায় ঠাকুরগাঁও মহকুমা শহরের পতন ঘটলে এলাকার জনগণ পার্শ্ববর্তী সীমান্ত এলাকার কাছাকাছি বাড়িঘরে আশ্রয় নিতে শুরু করেছিল।
রানীশংকৈল থানার গণহত্যা বিশেষ করে খুনিয়াদিঘির হত্যাযজ্ঞ ও খানসেনা এবং তাদের দোসরদের তৎপরতার খবর হরিপুর এলাকায় পৌঁছলে সেখানের সাধারণ মানুষের নিরাপদ আশ্রয় সীমান্তবর্তী এলাকায় যাওয়াটাই ছিল অত্যন্ত স্বাভাবিক। ফলে খানসেনারা হরিপুর থানার দিকে প্রথম থেকেই কম নজর দিয়েছে।
রানীশংকৈল থানার মতোই এখানে ছিল ‘মালদাইয়া’ সম্প্রদায়। খানসেনারা যখন রানীশংকৈল থানায় তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে নানাবিধ উপায়ে নির্যাতন ও গণহত্যা শুরু করেছিল সে সময়ে হরিপুর এলাকার ‘মালদাইয়া’দের একটি বিরাট অংশ গোপনে হরিপুরের সমস্ত খবরাখবর খানসেনাদের ক্যাম্পে পৌঁছে দেয়া শুরু করেছিল। খানসেনারাও বিপদমুক্ত অবস্থানে থেকে এসব দোসরকে সহায়তায় অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল।
খানসেনা ও তাদের দোসরেরা মিলে বালিহারা, বীরগড়, রুহিয়া, ভাতুরিয়া, বহতি, গড় ভবানীপুর, চাপাসার, যামুন, নন্দগাঁও, আমগাঁও, দস্তপুর, ডাঙ্গীপাড়া, শিহিপুর, বুজরুক, নারগুন, বকুয়া ও দনগাঁও এলাকার বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে।
মোসলেম উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ জানান যে, খানসেনারা যতটা না নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগ করেছে তার চেয়ে বেশি করেছে স্থানীয় দোসরেরা। তারা এলাকার পর এলাকা অগ্নিসংযোগ করেছে। মে মাসের মধ্যেই গোটা হরিপুর থানা বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছিল। ১১ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
[৯৫] মোহাম্মদ এমদাদুল হক

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!