সি.ও অফিস সংলগ্ন বধ্যভূমি, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা থানার সিও অফিসে ছিল হানাদার বাহিনীর ক্যাম্প। ক্যাম্পের পূর্ব পাশে টিলার নিচে একটি বধ্যভূমি রয়েছে। বাঙালি নিধনের কলঙ্কময় অধ্যায় রচিত হয়েছে পাকহানাদার কর্তৃক এ বধ্যভূমিতে। বিভিন্ন প্রত্যক্ষদর্শীর মতামত থেকে জানা যায়, বড়লেখা থেকে অনেক লাশ পাকবাহিনী গাড়ি করে অন্যত্র নিয়ে গেছে। অনেককেই এ বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয়েছে। এ বধ্যভূমির এক জ্বলন্ত স্বাক্ষর মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সারির সংগঠক মুক্তিযোদ্ধা মন্তজির আলী। এ বধ্যভূমি থেকে বেঁচে যান। তাঁর বর্ণনামতে, এ বধ্যভূমিতে দক্ষিণভাগের নরসুন্দর সম্প্রদায়ের ৬ জনকে বর্বররা সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে হত্যা করে। এ বধ্যভূমিতে মন্তজির আলীকে বর্বরোচিত, নৃশংস নির্যাতন চালিয়ে মৃতপ্রায় করে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন এ বিশ্বাসে বর্বররা ফেলে রেখে যায়। অলৌকিকভাবে মন্তজির আলীর জ্ঞান ফিরে আসে বধ্যভূমিতে। কিন্তু পালিয়ে যাওয়ার আগেই পাকবাহিনী তার জীবিত অবস্থা লক্ষ্য করে তাঁকে আবার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। পাল্টায় তাদের নির্যাতনের ধরন। ১ মাস ৪ দিন তার ওপর নির্যাতন অব্যাহত রাখা হয়। জীবনীশক্তি লোপ হয়েছে ভেবে তার ভাগ্যের জোরে মন্তজির আলী ছাড়া পান।
[১২] গোপাল দত্ত
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত