শাহবাজপুর বিডিআর ক্যাম্প বধ্যভূমি, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজার জেলার শাহবাজপুর উচ্চবিদ্যালয় বধ্যভূমির কয়েকশ গজ দূরে পাকহানাদার ক্যাম্প ছিল। বর্তমানে যেখানে বিডিআর ক্যাম্প রয়েছে, সেটাই ছিল পাকহানাদারদের ক্যাম্প। উঁচু টিলাতে অবস্থিত এ ক্যাম্পে হানাদারদের নির্যাতন কেন্দ্র ছিল। স্বাধীনতার পর প্রত্যক্ষদর্শীরা মানুষের হাড়, খুলি এবং দেহের খণ্ডিত অংশ দেখে স্তব্ধ হয়ে যায়। সুজাউলের পাঁচপাড়া গ্রামের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহমানের বৃদ্ধ পিতাকে এ ক্যাম্পে দু সপ্তাহ আটকে রেখে তাঁর পুত্রের মুক্তিযুদ্ধে যোগদানের প্রতিশোধ নেয়। দুঃসহ যন্ত্রণার স্মৃতি, পুত্র হারানোর শোক বুকে নিয়ে বেঁচে আছেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার পিতা আবদুল গফুর।
মুক্তি সংগ্রামের শেষদিকে শাহবাজপুর ক্যাম্প আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। দু’পক্ষের মধ্যে মরণপন লড়াই চলতে থাকে। লড়াই চলে সামনে। ইপিআর হাবিলদার মান্নান কাম্পের শীর্ষে চাঁদতারা মার্কা পাকিস্তানি পতাকার উপস্থিতি সহ্য করতে পারছিলেন না এক মুহূর্তও। সহযোদ্ধারা যখন ক্যাম্প আক্রমণে ব্যস্ত মান্নান তখন একাই ক্যাম্পের শীর্ষে বর্বরদের উড়তে থাকা নিদর্শনকে নিশ্চিহ্ন করে দেন। বীরত্বের অভূতপূর্ব উদাহরণ স্থাপন করে তিনি ক্যাম্পের পতাকা নামিয়ে ফেলেন। তখনই পাকিস্তানিদের চোখে পড়েন তিনি। মর্টার শেলিং হয় তার ওপর। লুটিয়ে পড়েন মান্নান।
[১২] গোপাল দত্ত
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত