You dont have javascript enabled! Please enable it!

শাকপুরা গ্রাম বধ্যভূমি, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের সাবেক বোয়ালখালী থানার শাকপুরা গ্রামেও রয়েছে বধ্যভূমি। ২০ এপ্রিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসররা খুব ভোরে গ্রামটি ঘিরে ফেলে। গ্রামবাসী তখনো সবাই ঘুম থেকে ওঠেনি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গ্রামবাসী দেখল সামনে পাকসেনা। পালাবার পথ নেই। তবুও সেদিন গ্রামের মানুষ পালিয়ে প্রাণে বাঁচতে চেয়েছিল। হানাদারদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে কেউ পালাতে পারল, কেউ পালাতে গিয়ে গুলিতে প্রাণ দিল। পাকসেনারা গ্রামে আগুন ধরিয়ে দিল। তারপর গুলি আর গুলি। চারদিকে আগুন, শিশু-নারী-পুরুষের আর্তচিৎকার আর আহাজারিতে শাকপুরা গ্রাম যখন কাঁদছে, তখন একদল মানুষ নামের পশু লুট করে চলল। কেবল সম্পদ নয়- নারীও। অসংখ্য নারী তার সম্ভ্রম হারাল। একপর্যায়ে থেমে গেল চিৎকার। গ্রামের ১৫০ জন মানুষ প্রাণ দিল। মাটিচাপা দেয়া হলো কোনো রকমে। যারা পালাতে পেরেছিল, তারা একে একে সন্ধ্যায় আপন গ্রামে ফিরে এল। তারা দেখল তাদের সবকিছু শেষ। কারো বোন নেই, কারো ভাই নেই, কারো স্বামী নেই, কারো সন্তান নেই। এরপর ঘরে খাবার নেই। কেবল নেই। জীবিতরা সবাই সবাইকে ধরে কেঁদে উঠল। সে এক করুণ হৃদয় বিদারক দৃশ্য। একাত্তরে এমনি দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল বাংলার প্রতিগ্রামে, প্রতিঘরে।
[১৩৭] সুকুমার বিশ্বাস

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত