লাকসাম সিগারেট ফ্যাক্টরি গণহত্যা, কুমিল্লা
লাকসাম সিগারেট ফ্যাক্টরিতে পাকিস্তানিরা যে বর্বরতা, নৃশংসতা, ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড ঘটায় তা খুবই মর্মন্তুদ। এই ফ্যাক্টরির বিভিন্ন কোণায়, কক্ষে ও কোঠায়, সেলে এবং ছাদে অত্যাচার, নারী ধর্ষণ এবং নির্বিচার গণহত্যা চলে। তারা গ্রামগঞ্জ ও জংশনে অপেক্ষমান ট্রেন থেকে বিভিন্ন বয়সের নিরীহ পুরুষ ও মহিলা যাত্রীদের জোরপূর্বক ধরে এই হত্যাপুরীতে বন্দি রেখে নির্যাতন ও নৃশংসভাবে হত্যা করে। অনেক মেয়েই এই নৃশংস যৌন নির্যাতনে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। অনেক নারী সম্ভ্রমহানির প্রেক্ষিতে আত্মহত্যাও করেন। আর এই বিকারগ্রস্ত পাকিস্তানি নরপশুরা পরিকল্পিতভাবে মেয়েদের ভয়ঙ্কর নির্যাতন করার মধ্য দিয়ে আমাদের অহংকারকে পদদলিত করার অভিপ্রায়ে অনেক মহিলা যাত্রী ও গ্রাম থেকে ছিনিয়ে আনা পল্লীবালা ও কুলবধূদের এখানে এনে উলঙ্গ করে কারখানার রেলিং বিহীন ছাদে উঠিয়ে দু হাত উপরে তুলে সারাদিন হাঁটতে বাধ্য করত। এই নির্যাতনে যে সমস্ত মেয়ে মৃত্যুবরণ করতেন অথবা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়তেন তাঁদের মরদেহ কারখানার বিভিন্ন কোনায় পুঁতে ফেলা হতো।
[৩৪] ডা. এম.এ. হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত