You dont have javascript enabled! Please enable it! রেলওয়ে স্টেশন বধ্যভূমি ও কসাইখানা | চাঁদপুর - সংগ্রামের নোটবুক

রেলওয়ে স্টেশন বধ্যভূমি ও কসাইখানা, চাঁদপুর

চাঁদপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকা ছিল বধ্যভূমি-কসাইখানা। চাঁদপুর পুরনো বাজারে নুরিয়া হাইস্কুলে ছিল আলবদর বাহিনীর ক্যাম্প। রেল স্টেশনের অফিসসমূহ এবং রেস্ট হাউসেও পাকিস্তানি ও তার দোসরদের ক্যাম্প ছিল। শান্তি কমিটির সহযোগিতায় চাঁদপুর পুরান বাজার ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহে হত্যা, লুট, নারী নির্যাতন ও অগ্নিসংযোগে এক নারকীয় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। … বন্দর শহরের প্রায় সকল দোকানপাটই লুটতরাজ হয়। নির্বিচারে গণহত্যা ও বহু নারীর সতীত্ব নষ্ট করার বিবৃতি দান করেন ফজলুল বারী। রেল, লঞ্চ, রাস্তাঘাট নৌকাসমূহে ও বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে হানা দিয়ে নিরীহ নিরপরাধ বাঙালিদের ধরে এনে তাদের ক্যাম্প সংলগ্ন নির্যাতন কক্ষে অমানুষিক নির্যাতন করেন হত্যা করা হতো। একটি আমগাছের নিচে ফিশিং কর্পোরেশনের গুদামের পেছনেই দুর্ভাগাদের হত্যা করে একই তারে গ্রথিত করে নদীতে ফেলে দিত। যেদিন মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হতো, সেদিন ডোমদের তলব করা হতো। রেলের ডোম ছুনিয়া ও গয়াপ্রসাদ বলে, গভীর রাত্রে এসে পাকবাহিনীর লোক তাদের কোয়ার্টার থেকে ধরে নিয়ে যেত। স্টেশনের ওয়েটিং রুমে জিআরপি হাজতে অথবা আক্কাস আলী হাইস্কুলে রক্তাক্ত মৃতের স্তূপ দেখিয়ে বলত, ভাঙ্গী, ইয়ে জলদি সাফ করো। মৃতদেহ বয়ে নিয়ে নদীতে ফেলতো হতো এবং ভোর না হতেই উল্লিখিত নির্যাতন কক্ষের স্থান পরিষ্কার করে ফেলতে হতো।
[১৩৭] সুকুমার বিশ্বাস

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত