You dont have javascript enabled! Please enable it!

রূপসা থানার গণহত্যা ও নির্যাতন, চিলমারী

রূপসা থানার কান্তাপুরের চিলমারী গ্রামে ছিল আর একটি বধ্যভূমি। রাজাকার ও পিস কমিটির লোকজন এখানে হত্যাকাণ্ড চালাত। স্বাধীনতার পর অনুসন্ধানের মাধ্যমে এটি আবিষ্কৃত হয়। এখানে নিহতের সংখ্যা প্রায় পনের হাজার বলে উল্লেখ করা হয়। অনুসন্ধানের সময় এই বধ্যভূমিতে অসংখ্য মানুষের কঙ্কাল ছড়ানো- ছিটানো ছিল বলে জানা যায়।
চিলমারীতে প্রতি রাতের হত্যাযজ্ঞের সময়ে মৃত্যুপথযাত্রীদের আর্তচিৎকার ও গুলিল শব্দে গ্রামজুড়ে এক ভয়ার্ত পরিবেশর সৃষ্টি হতো। গ্রামের লোকজন ভয়ে দিনের বেলায়ও এখানে আসতে সাহস পেত না। এখানে নিহতদের অধিকাংশই ছিল ভারতগামী শরণার্থী। অবশ্য চিলমারীর আশপাশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অনেককে রাজাকাররা ধরে এনে এখানে হত্যা করে। এখানে নিহত অসংখ্য ব্যক্তির মধ্যে মাত্র আটজনের নাম-পরিচয় জানা সম্ভব হয়েছে।
এই গণহত্যা ছাড়াও রূপসা থানায় আরো কয়েকটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। রূপসা থানার বাহিরদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুনসুরুল হক ১৯৭১ সালে মুসলিম লীগ ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যোগ দেন। বিবেকতাড়িত হয়ে তিনি এলাকায় রাজাকারদের লুটপাটের বিরোধিতা করলে খুলনা থেকে একদল রাজাকার এসে তাঁকে ও তাঁর সাথে থাকা তাঁর এক নিকট আত্মীয়কে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করে। রাজাকাররা কাজদিয়া হাইস্কুলের শিক্ষক কালিপদ পাল, পীঠভোগ গ্রামের পাগল সমাদ্দার, এ অঞ্চলের এক কালের জমিদারের নায়েব মতিলাল দত্তকেও হত্যা করে। এছাড়া তারাপদ নামক একজন দিনমজুরকে তার স্ত্রী রাজাকার ক্যাম্পে কাজ করতে রাজি না হওয়ায় হত্যা করে।
[৯২] মোল্লা আমীর হোসেন

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!