You dont have javascript enabled! Please enable it!

রণজিতপুর গণহত্যা, বাগেরহাট

মে মাসের ২৮-২৯ তারিখের দিকে বাগেরহাটের রণজিতপুর এলাকায় এক বীভৎস আলোড়ন সৃষ্টিকারী গণহত্যার ঘটনা ঘটে। বাগেরহাটের বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ অজিয়র রহমান ধরা পড়ার পর বাগেরহাট থানার ওপর আক্রমণ চালিয়ে তাঁকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। তখন তাদের তৎপরতায় এ এলাকা একটা সুরক্ষিত মুক্ত এলাকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। এ খবর বাগেরহাটের রাজাকার বাহিনীর কাছে পৌঁছে যায়। প্রথমে রাজাকারদের একটা ছোট দল এ এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে। তবে তারা ব্যর্থ হয়ে এবং নাস্তানাবুদ হয়ে ফিরে যায়। এর প্রায় এক সপ্তাহ পর এ ঘটনার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য রাজাকার ও মিলিশিয়াদের একটা বড় দল সমস্ত রণজিতপুর এলাকা ঘিরে ফেলে। তাদের এক দল আসে হাকিমপুর মাদ্রাসার দিক থেকে এবং অপর দল আসে পোলেরহাটের দিক থেকে। সকাল ৭-৮টার দিকে যুদ্ধ শুরু হয়, মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপণ প্রতিরোধ চালিয়ে যেতে থাকে। তবে দুপুরের পর তাদের প্রতিরোধ ব্যূহ ভেঙে যায় এবং তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এরপর রাজাকারেরা রণজিতপুরের হিন্দু এলাকাসমূহে গণহত্যায় নেমে পড়ে। বহু নিরীহ মানুষকে তারা হত্যা করে। কম করে হলেও সেদিন ৩০-৪০ জন মানুষ তাদের হাতে নিহত হয়। সঙ্গে সঙ্গে চলে লুটপাট ও নারী ধর্ষণ। ধর্ষণের পর মহিলাদের উলঙ্গ করে ছেড়ে দেয়া হতে থাকে। কারো কারো চুল কেটে নেয়া হয়। এমন নিষ্ঠুরতার পরিচয় অন্যত্র খুব বেশি খুঁজে পাওয়া যাবে না।
[১২২] শেখ গাউস মিয়া

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!