You dont have javascript enabled! Please enable it!

মাকরান্দা গণহত্যা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে ৩০ কি. মি. দূরে গোদাগাড়ি থানায় পাকড়ী ইউনিয়নের এক নিভৃত গ্রাম মাকরান্দা, ৪ ডিসেম্বর বেলা ২টা থেকে আড়াইটার দিকে এই মাকরান্দা গ্রামের অধিবাসীদের ওপর রাজাকারদের আকস্মিক ও নারকীয় হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ৮ মাস এই গ্রামটি মোটামুটি শান্ত ছিল। তবে কখনো ললিত নগরের রাজাকার ও পাক ফৌজদের গ্রামের দিকে আসতে দেখলে অধিবাসীরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে পাকা ধানক্ষেতে শুয়ে থাকত, তারা চলে গেলে আবার ফিরে আসত। নভেম্বরের শেষের দিকে একদল মুক্তিযোদ্ধা ললিত নগরে রাজাকারদের গতিবিধি লক্ষ্য করার জন্য গ্রামের বাইরে আসে। ২ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিযোদ্ধারা গ্রামে ঢুকে শান্তি কমিটির নেতা আব্দুল আজিজের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। আজিজ বাড়িতে ছিল না। আজিজের মা সন্দেহ করেছিল আজিজকে মুক্তিযোদ্ধারা ধরে নিয়ে গেছে। এ সন্দেহের কারণে আজিজের মা ললিতনগর রাজাকার ক্যাম্পে এ খবর পৌঁছে দেয়। ফলে মাকরান্দা গ্রাম রাজাকার ও পাক ফৌজদের ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়। ৪ ডিসেম্বর বেলা ২টা আড়াইটার দিকে রাজাকার ও পাকফৌজরা তিন দিক থেকে গ্রামটিকে ঘিরে সামনে যাকে পেয়েছে তাকে ব্রাশফায়ার করে। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে ঢুকে ৩৪ জন নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করে। লাশগুলোকে জমা করে গ্রামের বাঁধা পুকুরের পাড়ে। তারপর সারা গ্রামে লুটপাট আর অগ্নিসংযোগ করে। সে হত্যাযজ্ঞে ৩টি গুলি খেয়েও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় আব্দুস সামাদ। যাকে পাক ফৌজরা মৃত মনে করে ফেলে গিয়েছিল।
[৪৫০] রফিকুল আকবর

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!