You dont have javascript enabled! Please enable it! মাথিউরা গণহত্যা | সিলেট - সংগ্রামের নোটবুক

মাথিউরা গণহত্যা, সিলেট

সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার পশ্চিমে অবস্থিত একটি ইউনিয়ন হচ্ছে মাথিউরা। এ গ্রামেরই সন্তান প্রবীণ কথা সাহিত্যিক আকাদ্দস সিরাজুল ইসলাম ছিলেন থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বাউল শিল্পী ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কমর উদ্দিনকে পাক হায়েনারা গোপালগঞ্জ থানার আমকোনা গ্রাম থেকে বন্দি করে। তাঁর ওপর অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন চালায়। তারপর এক সময় ছেড়ে দেয়। কিন্তু এ সময়ই ক্যাপ্টেন গণ্ডলের হাতে পৌঁছায় মাথিউরার কুখ্যাত দালাল জামিল রেদওয়ানের (বোরখা হাজী) একটি চিঠি। পত্রখানার পাঠ সমাপন করেই কমর উদ্দিনকে আবার ধরে নিয়ে আসার নির্দেশ দেয়া হয়। কমর উদ্দিন তখন বাড়ি ফিরছিলেন। রাস্তা থেকে আবার ধরে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। আর সাথে সাথেই পাঠিয়ে দেয়া হয় কাঁঠালতলায়। তাঁকে সেখানে গুলি করে হত্যা করা হয়।
মাথিউর আওয়ামী লীগ কর্মী আজির উদ্দিন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করায় তাঁর বাড়ি আক্রমণ করে পাকসেনারা। পুড়িয়ে দেয়া হয় বাড়ির প্রতিটি ঘর। ধরে নিয়ে যায় তাঁর বড় ভাই সিরাজ উদ্দিনের স্ত্রীকে। পরদিন স্ত্রীকে মুক্ত করতে গিয়ে নিষ্ঠুর মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হয় সিরাজউদ্দিনকে। শহীদ সিরাজের ভিটায় আজ তাঁর স্ত্রীর স্থান নেই। বাপের বাড়িতে এখনো তাঁকে লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সহ্য করে দিন গুজরান করতে হচ্ছে। সহোদর ভাইয়ের মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেয়ার অপরাধে পাকিস্তানি হায়েনারা বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে আবদুল হাসিব ও আবদুল লতিফ নামের দুই ভাইকে। নির্যাতন চালায় তাহির আলী, রফিক উদ্দিন, জিয়া উদ্দিন, তাজ খান, নুরু উদ্দিনসহ অনেকের ওপর। অনেককে আটক করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে তারা। এঁদেরই একজন মুজাহিদ আলী খান। অগ্নিসংযোগে ভস্মীভূত করা হয় প্রবীণ কথাসাহিত্যিক আকাদ্দস সিরাজুল ইসলামের বাড়ি। এভাবে আরো বহু বাড়িঘর পুড়িয়েছে তারা। পাকবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে শাহাদাত বরণ করেন নামর আলী এবং আবদুল মতিন।
[৪৬] তাজুল মোহাম্মদ

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত