মাদারীপুর শহর গণহত্যা, মাদারীপুর
২৪ এপ্রিল পাকবাহিনী মাদারীপুর শহরে প্রবেশ করে এমপি আসমত আলী খান ও ফণীভূষণ মজুমদারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে এবং বহু বাড়িঘর ও দোকানপাট লুটপাট করে। অক্টোবরের মাঝামাঝি ঘটকবর হাইস্কুলে রাজাকারদের ক্যাম্পে আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। এর বদলা নিতে পরদিন ভোরের দিকে পরিকল্পিতভাবে পাকবাহিনী আক্রমণ চালায়। তারা নিরীহ গ্রামবাসীকে যাঁকে যে অবস্থায় পায় গুলি করে হত্যা করে। প্রতিটি বাড়িতে আগুন লাগায়। ক্যাম্প এলাকায় দুশর বেশি নারী, পুরুষ ও শিশুকে তারা হত্যা করে।
২৭ আগস্ট ১৯৯৩ ‘সংবাদ’-এ প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে মাদারীপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার ফরাজী বলেন, ‘৭১ সালের জুলাইয়ে তিনি ধরা পড়েন। হাওলাদার জুট মিলে ডি কোয়ার্টারের তাঁকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়। রাইফেলের বাঁট দিয়ে তাঁর দাঁত ভেঙে দেয়া হয়। তাঁর সাথে দুশর মতো যুবক ছিলেন যার মধ্যে ৯-১০ জন বাদে সবাইকে হত্যা করে হানাদাররা।
পালং থানার আব্দুল কাদের ব্যাপারী জুট মিলেই বন্দি ছিলেন। জেটির ওপর দাঁড় করিয়ে যখন পাকসেনারা গুলি করে বাঙালিদের নদীতে ফেলে দিচ্ছিল, তখন পানিতে পড়ে যান তিনি। ভান করেন যেন গুলি লেগেছে। অনেক কষ্টে সাঁতরে নদী পার হয়ে বিবস্ত্র অবস্থায় একটা আশ্রয়ে যেয়ে ওঠেন।
[৩৪] ডা. এম.এ. হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত