You dont have javascript enabled! Please enable it!

ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট বধ্যভূমি, কুমিল্লা

কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের পুরো এলাকাটাকেই পাক হানাদার বাহিনী বধ্যভূমিতে পরিণত করেছিল। ২৫ মার্চের পর যে সমস্ত ক্যান্টনমেন্টে তারা সবচেয়ে বেশি হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট তার মধ্যে অন্যতম। ক্যান্টনমেন্টে যে সমস্ত বাঙালি অফিসার ও জোয়ান আটকা পড়েছিল তাদের প্রায় সবাইকেই নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ময়নামতিতে নরপিশাচরা যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তার প্রত্যক্ষদর্শী তিনজনের কাছ থেকে এ ব্যাপারে জানা যায়। সেনাবাহিনীর বাঙালি অফিসার, সৈনিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনীতিক, শিক্ষাবিদ, ছাত্র, শিক্ষক, সরকারি কর্মচারী, স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী গৃহবধূ এমনকি মসজিদের ইমাম পর্যন্ত পাকবাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পায়নি। ২৯ মার্চ বাঙালি অফিসার বেসামরিক কর্মচারীসহ তিন শতেরও বেশি লোককে ব্রিগেড অফিসের পাশে একটি কুলগাছের নিচে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ক্যান্টনমেন্টের দক্ষিণে মাঠের সমস্ত জায়গা জুড়ে রয়েছে গর্তের পর গর্ত। প্রতিটি গর্তেই ছিল অসংখ্য কঙ্কাল আর মাঠে ছড়িয়ে ছিল শত হাড় আর মাথার খুলি, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বিকৃত লাশ, কোথাও পড়ে ছিল খসে পড়া মাথার চুল। মাঠের পূর্বদিকে বিরাট তিনটি ডোবায় কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করে মাটিচাপা দেয়া হয়েছিল।
[৩৪] মঞ্জুমা সেলিম

সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!