ভেদরগঞ্জ থানার গৈড্যা গ্রাম নির্যাতন ও গণহত্যা, শরীয়তপুর
পাকবাহিনী শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ থানার গৈড্যা গ্রাম থেকে ৩০ জনের অধিক গৃহবধূ ও যুবতীকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর আনুমানিক ১০ জনকে ছেড়ে দিলেও বাকি সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে। ঐ সময় পাকবাহিনীর সহযোগীরা বুড়িরহাট, সাজনপুরহাট ও ভেদরগঞ্জ হাটসহ বহু মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি লুটতরাজ করে। পাকবাহিনীর ভয়ে আতঙ্কিত শত শত গ্রামবাসী নিজ নিজ ঘরবাড়ি, সহায় সম্বল ফেলে রেখে নৌকায় আশ্রয় নেয়। পরবর্তীতে পাকবাহিনী নড়িয়া থানায় ঢুকে আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা ও কর্মীর বাড়ি এবং ঘড়িষার, নড়িয়া ও ভোজেশ্বর বাজার পেট্রোল দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। তারা ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের রামঠাকুরের মাঠে কয়েকটি ডিনামাইট ফাটায়।
পূর্ব নড়িয়া গ্রামের নাছিমা বেগমকে (১৮) পাকবাহিনী একটি ঘরের ভেতরে আটকে রেখে বাইরে থেকে অগ্নিসংযোগ করে। এতে ঘরটি পুড়ে যায় এবং নাছিমা জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। ঐ এলাকার কালাই ছৈয়ালকে পাকবাহিনী গুলি করে হত্যা করে। এ ছাড়া পাকবাহিনী সিংহ গ্রামে ঢুকে মুক্তিযোদ্ধা মনে করে ৪ জন পুরুষ ও ৩ জন মহিলা এবং যুক্তিতলা থেকে ১ জন মহিলাকে ধরে এনে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে।
[৩৪] ডা. এম.এ. হাসান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত