ভৈরব গণহত্যা, কিশোরগঞ্জ
১৪ এপ্রিল ভোর থেকেই পাকবাহিনীর ৪টি জেটবিমান ভৈরব শহরের ওপর গোলাবর্ষণ করতে থাকে। এছাড়া নদীপথে কয়েকটি গানবোট ও স্থলপথে ভৈরবের পশ্চিমে রামনগর সেতুসংলগ্ন এলাকা থেকে হানাদার বাহিনী গুলি ছুড়তে ছুড়তে শহরের দিকে অগ্রসর হয়। দুপুরে সামরিক বাহিনীর কয়েকটি হেলিকপ্টার থেকে ভৈরবের মধ্যেরচর নামক এলাকায় ছত্রীসেনা নামিয়ে দেয়। তখন হানাদার বাহিনী দেখে প্রাণভয়ে মানুষ পালাতে থাকে। হানাদার বাহিনীর সদস্য ছত্রীসেনারা শহরে প্রবেশ করার সময় পথিমধ্যে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও অগ্নিসংযোগসহ ত্রাস সৃষ্টি করে তোলে। ছত্রীসেনা দল কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে শহরে প্রবেশ করার সময় শম্ভুপুর সংলগ্ন আলগড়া নামক একটি খেয়াঘাটে নদী পারাপারে অপেক্ষমান নিরীহ, নিরপরাধ ও নিরস্ত্র সাড়ে ৩০০ মানুষকে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে। এখানে সহস্রাধিক লোক নদী পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। বর্বর হানাদার বাহিনী এদিন শিশু, মহিলাসহ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের পর্যন্ত রেহাই দেয়নি। এছাড়া পাকসেনারা গোছামারা, চণ্ডিবের, কালিপুর, ভৈরবপুর, কমলপুর ও ভৈরব বাজারে আরও দুই শতাধিক নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে।
[808] আসাদুজ্জামান ফারুক
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত