মধুখালী (থানা) হত্যাকাণ্ড, ফরিদপুর
ফরিদপুর পতনের পর পাকসেনারা সেলিং করতে করতে কামারখালীর দিকে অগ্রসর হয়। বিভিন্ন গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। ঐ দিনই কামারখালীতে ব্যাপক লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। ক্যাম্প করা হয় কামারখালীতে। বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে ব্যাপকভাবে লুটপাট করে। ঐ সময় পাকসেনারা রাজাকারদের সহায়তায় বর্তমান মধুখালী থানার গাজনা গিয়ে একই দিনে ১৩ জনকে গুলি করে হত্যা করে। কালীমন্দির ও প্রায় প্রতিটি বাড়িতে লুটপাট করে। কামারখালী বাজারসংলগ্ন মছলেন্দুপুরে বেশ কিছু সংখ্যক লোককে ধরে নিয়ে হত্যা করে।
মধুখালী হাইস্কুলে অস্থায়ী কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে লুটের জিনিসপত্রসহ রসদ ভাণ্ডার করা হয়। অনেক যুবককে এখানে ধরে এনে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। বহু নারীকে ক্যাম্পে ধরে এনে তাদের ওপর নির্যাতন করা হয়। পাকসেনারা বিভিন্ন বাড়িতে ঢুকেও নারীদের ওপর নির্যাতন করত।
নারী সরবরাহকারী এক দালালের স্ত্রীকে তারা ধর্ষণ করে। পরে সেই লোকটি পাগল হয়ে যায়। পরীক্ষিত গ্রামের বাদি খাঁর স্ত্রীকে ধরে নিয়ে যায় পাকসেনারা। আটক অবস্থায়ই তার মৃত্যু হয়।
যশোর থেকে হটে আসা পাকসেনারা মধুমতী নদীর এপার আশ্রয় গ্রহণ করে। তখন তারা বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে লুটপাট ও ধর্ষণ করে। এমনকি বৃদ্ধাদেরও এ পাশবিক অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই দেয়া হয়নি।
[১৫] আবু সাঈদ খান
সূত্র: মুক্তিযুদ্ধ কোষ (দ্বিতীয় খণ্ড) – মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত